বিভ্রান্ত না হয়ে গত ১৩ জানুয়ারি নির্ধারণ করা দামে স্বর্ণ ও রুপা ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে সই করেন বাজুসের সভাপতি এনামুল হক খান এবং সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারিতে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাজুস জানায়, ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অতিরিক্ত সাধারণ সভায় (ইজিএম) স্বর্ণের মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট ও মজুরি যোগ করে পুনরায় মূল্য নির্ধারণ করার বিষয়টি কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়- স্বর্ণের দাম নির্ধারণে নতুন নিয়ম আসছে। এতে স্বর্ণের ও রুপার দাম বেড়ে যাবে।

এ নিয়ে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বর্ণের দাম নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দেয়, যা নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি জাগো নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে স্বর্ণের দাম নতুন করে বাড়বে বা কমবে না বলেও তথ্য প্রকাশ করা হয়।

জাগো নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশ করার একদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এখন স্বর্ণের দাম নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাল বাজুস।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘স্বর্ণের মূল্যের সব সিদ্ধান্তই অতীতের ন্যায় যথারীতি লিখিতভাবে সবাইকে জানানো হবে। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।’

ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বাজুস বলেছে, ‘আপাতত বাংলাদেশের সব জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণকে পূর্বের (২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি নোটিশে প্রকাশিত) মূল্যে স্বর্ণ ও রৌপ্য ক্রয় বিক্রয় করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ৩ ফেব্রুয়ারির ইজিএমে স্বর্ণের মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট ও মজুরি যোগ করে পুনরায় মূল্য নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত কণ্ঠভোটে পাস হলে, অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য বিষয়টিতে বিদ্যমান আইনের আলোকে পরামর্শ চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট শাখায় চিঠি দেয়া হয়েছে।’

এছাড়া সিদ্ধান্ত প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিশদ বিশ্লেষণ ও পরিবর্তিত স্বর্ণের মূল্যে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে কি ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে বা করোনার সময়ে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্তের ফলে এই সেক্টর কি কি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে তার মূল্যায়ন করে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চিঠি পাওয়ার পর নতুন সিদ্ধান্ত প্রয়োগের সময় নির্ধারণের জন্য বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আয়োজন করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাজুস।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের ৬ ফেব্রুয়ারির বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় যে ধরনের নিউজ এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে আমরা নতুন করে স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছি। এতে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- নতুন নিয়ম কার্যকর হলেও গ্রাহক পর্যায়ে স্বর্ণ-অলঙ্কারের দামের পরিবর্তন হবে না।

গত ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩ জানুয়ারি থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে ৫ শতাংশ ভ্যাট ও মজুরি যোগ করে এখন এক ভরি ভালো মানের স্বর্ণালঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের প্রায় ৮০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৯ হাজার ৫১৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭৬৯ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এই মানের স্বর্ণালঙ্কার কিনতেও ক্রেতাদের ৫ শতাংশ ভ্যাট ও মজুরি যোগ করে মূল্য পরিশোধ করতে হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading