৫ ই জানুয়ারি এটা কি দিবস ? এই প্রশ্ন তোলাই এখন অবান্তর , কেননা এই দিনটি দল বিশেষে নিজেস্ব মাজেজা আছে। আর আমাদের মতো ম্যাঙ্গো পিপোলের এই মাজেজা বুঝবার ক্ষমতা থাকলেও , সংগায়িত করার কোনো অধিকার নাই। কেননা আমরা ম্যাঙ্গো পিপোল এখন নিজের মতো করে চিন্তা ভাবনায় মগ্ন হতে পারি না। আমাদের ধ্যান জ্ঞান সকল কিছুই একটি আশ্চর্যজনক বৃত্তের মাঝে বন্দী । এই বৃত্তের বাহিরে আমরা সাধারণ জনগণ কোনো চিন্তাই যেন করতে পারি না। সকলেই কেমন জানি “হিজ্ হিজ্ হুজ হুজ” অবস্থা । সোজাসুজি বললে বলা যায়, নিজে বাচলে আব্বার নাম । এই প্রবাদটি সর্ব সময় ছিলো । কিন্তু প্রশ্ন জাগে সত্যি কি এর এতটা বর্তমানের মতো প্রয়োগ ছিলো ?
লক্ষ্যণীয় যে দেশে বর্তমানে সকল মানুষ, সে সাংবাদিক, সুশীল, উকিল, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী কিংবা আমাদের মতো আম জনতা সকলেই কোনো না কোনো দলে বিভক্ত । বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয় আ লীগের ( আপদের ) পক্ষে , না হয় বিএনপি ( বিপদের) পক্ষে। এই আপদ / বিপদ ছাড়া কিছু পক্ষ অবশ্য আছে , তাদের কে আবার আতেল পক্ষ বলা হয়। এই পক্ষ আবার নিজেদের জাহির করতেই ব্যস্ত, কাজের কাজ বলতে খালি পাত্র , অতিমাত্রায় বাজে। এই পক্ষ থিওরির উপর নির্ভরশীল, প্র্যাকটিকাল বলতে তাদের ফলাফল শূন্য । সুতরাং বলাই বাহুল্য সাধারণ জনগণ বাতাসের বাউ বুঝেই নিজের পাল তুলে ধরে। যাকগে আমরা আম জনতা এই আপদ/ বিপদ/ আতেল নিয়েই আছি , থাকবো । তাতেও কোনো অসুবিধে নেই , অসুবিধে হলো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকাশ্যে কার্যক্রম। তাদের ব্যাখ্যা /বিবরন আমাদের শুধু বিভ্রান্তই করে না , মাঝে মাঝে ভিমরি খেতে হয়।
পরিসংখ্যানে যা দেখতে পাই , তাতে মোটামুটি ভাবে আ লীগ আর বিএনপি কাছাকাছি পর্যায়ের জনগণের সমর্থন পাওয়া রাজনৈতিক দল। হয় তো ১৮/২০ তারতম্য আছে। পরিসংখ্যান বলে এই দুই দল ৪০ % এর কাছাকাছি ভোটারের দল। অর্থাত্ সূর্য পশ্চিমের বদলে উওর/দক্ষিণ এ অস্ত যেতে পারে , তবে এদের সমর্থনের ( তাদের ভাষায় ) কনফিডেন্স এর মাত্রা খুবিই শক্ত । তাদের কনফিডেন্স নিয়ে তারা থাকুন, এতে কোনো সমস্যা নাই। সমস্যাটি ভিন্ন জায়গায় ।
সমস্যার কথায় আসি।
৫ ই জানুয়ারি এক দল বলে “গণতন্ত্র হত্যা দিবস” আবার অন্য দল বলে ” গণতন্ত্র রক্ষা দিবস” !!!!!!!
তাহলে বিষয়টি কি দাঁড়ালো? দেশের ৪০% সমর্থনের একদল মিথ্যা বলছে । কেননা , দুটাতো আর একদিনে হতে পারে না । আর আমরা জনগণও এর সংগা দিতে পারবো না , কেননা আমরা তো আমাদের বিবেক/ জ্ঞান আগেই এদের কাছে জমা রেখেছি। সুতরাং কালোত্তীর্ণ হওয়ার আগে জমা করা জ্ঞানে হাতও দেওয়া যাবে না। তাহলে আবার দাদালের ক্ষেতাব নির্ঘাত কপালে জুড়ে যাবে।
অবশ্য গত একদিন পূর্বে আ লীগের মাননীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব এই দিনটিকে একটি নতুন নামে সংগায়ীত করেছেন। এই দিনটি ” বিএনপির মৃত্যু দিবস”। সত্য/মিথ্যা যাছাই না করেই বলা যায়, বিএনপি তো এখনও জীবিত আছে। কেননা এই বিএনপি কে নিয়ে তো আ লীগ কোনো কুলখানী না করে , বরঞ্চ সারাক্ষণই তাদের কে নিয়েই বগবগানিতে ব্যস্ত । মজার ব্যাপার হলো এই গণতান্ত্রিক বগবগানিতে নতুন মাত্রায় সাবেক প্রেসিডেনট বর্তমান বিশেষ দূত এরশাদ সাহেবও গণতন্ত্র কে বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। বলাই বাহুল্য এরশাদ সাহেব আবার ” নুর হোসেন হত্যা দিবস” কে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করেন । আমাদে মতো আম জনতার কি সৌভাগ্য , এরশাদ সাহেবও আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেন। এখানে উল্লিখিত যে এই এরশাদ সাহেব ঘোষণা করেছেন , ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ” ডাক্তার মিলন হত্যার ” বিচার করবেন। ম্যাঙ্গো পিপোল বিশেষ করে ম্যাঙ্গো ছাত্র সমাজ এখন হাসবেন না কাঁদবেন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিন।
একটি ছোট্ট গল্প বলেই শেষ করবো।
এক সময় আমাদের মা/বাবারা ছেলেদের জন্য নাদুস/নুদুস গোলগাল বউ খুঁজে নিতেন বা পেলে খুব খুশি হতেন। এরকমই এক মার ছেলের বউ নাদুস/নুদুস গোলগাল । মোটকায় জমা করা পানি থেকে পানি তুলতে গিয়ে গলার হাড় মোটকায় পরে যায় । বউ মোটকার পানিতে হাতিয়েও হাড়ের সন্ধান পায় না। শাশুড়ি বউ কে বলে , বউ মা তুমি মোটকার তলায় হাতিয়ে দেখ , হাড় পেয়ে যাবে। সেই গোলগাল ছোটখাটো মিস্ট্রি বউ , তার হাতখানাও স্বাভাবিক করাণেই একটু ছোটখাটো হওয়ায় মোটকার কোনো তলার নাগাল পায় না । অনেক চেষ্টা আর খোঁজাখুঁজি করেও যখন হাড় মিলে না , তখন বউ শাশুড়ি কে বলে , আম্মা আপনার অনেক বয়স হয়ে গেছে , তাই শুধু উল্টা পাল্টা বলেন , আসলে মোটকার কোনো তল্লাই নাই।
সত্যি বলতে আমাদের গণতন্ত্রের , গল্পের শাশুড়ির মতো অনেক বয়স হয়েছে , কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই গণতন্ত্রের কোনো তল্লাই নাই ।
বুলবুল / অস্ট্রিয়া , লিন্জ।