আমরা ছোট বেলায় শুনতাম, “পীর উড়তা নেহি, মুরিদ উড়াতা হায়।” অর্থ, পীর উড়ে না, মুরিদরা তাকে উড়ায়। অতি উৎসাহীরা তাদের প্রিয়জন বা নেতাকে বেশি বেশি তেলাওয়াতি করতে গিয়ে, তিনি যা নন তা বানাবার চেষ্টা করে তার চরম মর্যাদাহানি ঘটায়। এক পর্যায়ে তাকে হাস্যরসের খোরাকে পরিনত করে। আল্লাহ তা’লা ইচ্ছা করলে এক মুহুর্তেই সব হয়ে যায়, তবু তিনি ওহি প্রেরণের জন্য জিবরাইল, জান কবচের জন্য আজরাইল, পৃথিবী ধ্বংসের শিঙ্গা ফোঁকার জন্য ইসরাফিল, মাটি সিক্ত করার জন্য মেঘ, রোগমুক্তির জন্য ডাক্তার, ফুটফরমাশ খাটার জন্য অগনিতসংখ্যক ফেরেশতা সৃষ্টি করে রেখেছেন। আমরা আমাদের স্বাধীনতার ‘অ’ থেকে ‘চন্দ্রবিন্দু’ পর্যন্ত সব কিছু এক আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি কেন? স্বাধীনতা সংগ্রামের জিবরাইল, ইস্রাফিল, মিকাইলরা কই? ফেরেশতারা কই? তারা যুদ্ধটুদ্ধ করে নাই? তারা দেশ স্বাধীন করে নাই? রক্ত দেয় নাই? শহিদ হয় নাই? তাদের মা-বোন ইজ্জত হারায় নাই?। বুক চাপড়াইয়া কান্দে নাই? লজ্জায় সুইসাইড করে নাই? তারা কই? তাদের কথা কেউ বলে না কেন? ইতিহাসের কোথাও তাদের নাম লেখা নাই। কেন? মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস কি তাহলে এ ভাবে মহাকালের গহ্বরে হারিয়ে যাবে? কখনোই লেখা হবে না? কারো আমলেই না? কেউ লিখবে না? পঞ্চাশ বছর গেল, “বাঙলাদেশের ইতিহাস” নামে ২৫০ পৃষ্ঠার একটা অথেনটিক বই আজো বেরুলো না! এটা আমাদের জাতিগত লজ্জা ও অসম্মান! এ লজ্জা আমরা রাখবো কোথায়?
লেখক সাংবাদিক
শামসুদ্দিন পেয়ারার ফেসবুক সংগৃহীত ।