জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও নবগঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এইচএম এরশাদ গুরুতর অসুস্থ। তার শরীর বেশ ভেঙে পড়েছে। প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তার উঠতে-বসতে ও হাঁটাচলায় সমস্যা হলেও গত দুইদিন ধরে তার নড়াচড়া করার সামর্থ্যও কমে এসেছে। পরিমাণমতো খেতেও পারছেন না। ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিত্সাধীন এরশাদ এককথায় বিছানায় পড়ে গেছেন। এই অবস্থায় আগামীকাল রবিবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে।
এরশাদের ছোট ভাই ও জাপার কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের গতকাল শুক্রবার ইত্তেফাককে বলেন, ‘এরশাদ সাহেবের শরীর দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়েছে। হাঁটাচলা তো করতেই পারছেন না, এমনকি বিছানায় নড়াচড়া করতেও তার কষ্ট হচ্ছে। চিকিত্সকরা খাবারের পরিমাণ বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ঠিকমতো খেতেও পারছেন না, আজ (শুক্রবার) একটু খেয়েছেন, তাও পরিমাণে খুব সামান্য। সম্ভবত তার লিভারে খুব সমস্যা হচ্ছে।’
জিএম কাদের জানান, এরশাদ আজ শনিবার সিএমএইচ থেকে বারিধারার বাসায় যাবেন। সেখান থেকে আগামীকাল বেলা ১২টা ২০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যাবেন। সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে তিনি চিকিত্সা নেবেন, সেখানে হয়তো কয়েক সপ্তাহ থাকতে হতে পারে। জানা গেছে, এরশাদের সঙ্গে তার এক ছোট ভাই, ব্যক্তিগত সচিব ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার ও একজন ব্যক্তিগত স্টাফ সিঙ্গাপুর যাবেন।
সিএমএইচে এরশাদকে দেখতে যাওয়া জাপার একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে , এরশাদ বর্তমানে একা-একা বাথরুমেও যেতে পারছেন না। ওষুধ খাওয়ার জন্য পানির গ্লাসও নিজ হাতে ধরতে পারছেন না। কথাবার্তাও খুব কম বলছেন। এমনকি দলের ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করার জন্য কলম ধরতেও তার কষ্ট হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এরশাদ। এরপর থেকে বেশিরভাগ সময় তাকে হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে। ১০ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে চিকিত্সা নিলেও তার অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। রংপুর-৩ আসন থেকে এবারও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও অসুস্থতার কারণে একদিনও প্রচারণায় যেতে পারেননি। গত ৫ জানুয়ারি হুইল চেয়ারে করে সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে গিয়ে এমপি হিসেবে শপথ নেন।