দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর ধরে ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছেন গুম থেকে ফিরে আসা বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। ভারতের আদালত থেকে খালাস পেয়ে দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে ট্রাভেল পাসের আবেদন করেছিলেন তিনি। গত ৮ই মে ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের কাছে আবেদন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। দীর্ঘ এক মাস পর তার এই আবেদনে সম্মতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সালাহউদ্দিন আহমদের ‘ট্রাভেল পাসের’ অনুমতি-সংক্রান্ত আবেদনে তারা অনুমোদন দিয়েছেন। সাধারণত ভ্রমণ অনুমোদন হাইকমিশনই দিয়ে থাকে। যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) রয়েছে, তিনি ভারতে জেল খেটেছেন এবং তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সে জন্যই হাইকমিশন স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল।

একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তাকে দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন দিতে সম্মতি দেবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভ্রমণ অনুমোদন পেলে সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরতে পারবেন।

গত ৫ই জুন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ ডয়েচে ভেলেকে বলেন, আমি ইতিমধ্যে গোয়াহাটিস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ট্রাভেল ডকুমেন্টের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাইনি।

তিনি আরও বলেন, আমি প্রথম দিন থেকেই দেশে ফিরতে চেয়েছি। দেশে ফেরার গ্রেপ্তারের কোনো ঝুঁকি রয়েছে কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে ফেরার পর সেটা তখন দেখা হবে।

 

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ই মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। সে সময় তার দল এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গুম করেছে। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ই মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমেদ আদালতে বলেছিলেন, তাকে উত্তরার বাসা থেকে অপহরণ করা হয়। পরে কে বা কারা তাকে শিলংয়ে ফেলে যায়। গত মার্চ মাসে এ মামলায় আপিলের রায় ঘোষণা করে আদালত। চূড়ান্ত রায়েও তাকে খালাস দেয়া হয়। আদালত তাকে দ্রুত দেশে পাঠানোরও আদেশ দেয়। সালাহউদ্দিন আহমেদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। এরপর সরকারি চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার তিনি কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিন বারের সাবেক এই এমপি বিএনপি সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এর আগে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

facebook sharing button
twitter sharing button
skype sharing button
telegram sharing button
messenger sharing button
viber sharing button
whatsapp sharing button

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading