যে ক্যানসার নারীদের শরীরে সবচেয়ে বেশি হানা দেয়, জরায়ুমুখের ক্যানসার তার মধ্যে অন্যতম। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর কয়েক লাখ নারী মারা যান এই রোগে আক্রান্ত হয়ে।

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস’ (এইচপিভি) হল জরায়মুখের ক্যানসারের অন্যতম একটি কারণ। তবে এই ভাইরাস একমাত্র কারণ নয়। অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ এই ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সংক্রমণ ছড়াতে পারে সেখান থেকেই। সংক্রমণ ঘটার কয়েক বছর ধরে জরায়ুমুখের স্বাভাবিক কোষ পরিবর্তিত হতে থাকে এবং এক সময়ে তা ক্যানসারের আকার ধারণ করে। এ ক্ষেত্রে এইচপিভি-১৬, এইচপিভি-১৮— এই দু’টি ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ২০ বছরের কমবয়সীদের মধ্যে সাধারণত এই রোগ দেখা যায় না। পরিসংখ্যান বলছে, ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সী নারীরা এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি। তবে ৬০ বছরের পরেও হতে পারে এই রোগ।

জরায়ুর বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই ক্যানসারের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, অনিয়ম ঋতুস্রাব, কোমর ও তলপেটে ব্যথা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা করা, ব্যথা হওয়া— এই উপসর্গগুলো জরায়ুমুখের ক্যানসারের লক্ষণ।

এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ ফেলে রাখলে বাড়তে পারে বিপদ। এমনকি, মৃত্যুর আশঙ্কাও থেকে যায়। তাই অবহেলা করা ঠিক হবে না। বছরে দু’বার প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করাতে হবে। পিসিওএস থাকলেও সচেতন হতে হবে। গর্ভনিরোধক ওষুধ খেলেও পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের। ইচ্ছামতো কোনও ওষুধ খাবেন না। স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করাও অত্যন্ত জরুরি। শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সময়ে সতর্ক থাকুন। ধূমপানের অভ্যাস দূর করা জরুরি। সেই সঙ্গে সুষম আহার, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার, শাকসবজি, ফলমূল— বেশি করে খেতে হবে।

চিকিৎসকরা বলছেন, গার্ডসিল নামক টিকার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading