আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। শহীদ দিবসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, শহীদ মিনারে কাদের ভাই বলেছেন, বিএনপি সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে আলোচিত সাম্প্রদায়িকতার ঘটনাগুলো হলো- কক্সবাজারের রামু,  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সুনামগঞ্জের শাল্লা, রংপুরে হিন্দুপল্লীতে ছাত্রলীগ নেতাদের আগুন দেয়া, কুমিল্লার ঘটনা।

আজ গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকাল ৪টা থেকে সমাবেশটি শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়। সমাবেশে ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে চলে না’, ‘শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস রুখে দাও ছাত্র সমাজ’, ‘এই মুহূর্তে দরকার অন্তর্বর্তী সরকার’ স্লোগান দেয়া হয়।

অতীতের প্রতিটি আন্দোলন ছাত্র সমাজের প্রতিবাদ ছাড়া সফল হয়নি উল্লেখ করে নুর বলেন, আপনারা দেখেছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা, চট্টগ্রাম মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে আহত করে দুইজনকে আইসিইউতে পাঠালো, আইসিইউতে গিয়েও তাদের হুমকি দিচ্ছে, তোরা যদি আমাদের নাম বলিস তোদেরকে কবরে পাঠানো হবে। বিশ্বজিৎকে শিবির বলে কুপিয়ে মেরে ফেললো, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে মেরে ফেললো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই তাণ্ডব শুরু হয়েছে।

জোনায়েদ সাকির দেয়া বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আজকে ছাত্র সমাজকে একটা বার্তা দিতে চাই, তোমরা যদি ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হও, তোমরা যখন আক্রান্ত হবে তখন তোমাদের অভিভাবক হিসেবে আমরা মিছিল বের করে রাজপথে দাঁড়াবো। আমরাও তোমাদের সেই মিছিলে শামিল হবো।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্রলীগ মানেই তো আওয়ামী লীগের ছানাপোনা। এই সন্ত্রাস সারা দেশে আওয়ামী লীগ তৈরি করেছে।

সারা দেশে সন্ত্রাস করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমাদের পুতুপুতু করার সময় নাই। আপনারা যদি মনে করেন, ওদের সঙ্গে কথা বললে ওদের সঙ্গে সংলাপ করলে যদি কোনো সমাধান হয়, তাহলে ভেবে নিন আপনারা নিজেদেরকে তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে দেবেন। মান্না বলেন, সংলাপের বিরোধিতা করছি না আমি। যদি সত্যি সত্যি তারা সংলাপের প্রস্তাব দেয়, আগে বলবেন এই ধরনের পরিবেশ তৈরি হলে তারপর সংলাপে যাবো। সেই পরিবেশ যাতে শেখ হাসিনাকে স্বেচ্ছাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করবার কোনো ধরনের সুযোগ না দেয়। তিনি বলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের অধিকার আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার। সমস্ত ছাত্র সংগঠনেরই অধিকার আছে। আমরা এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। কোনো ধরনের আপস করতে আমরা আসি নাই। 

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য  বাচ্চু ভূঁইয়া, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদ খান প্রমুখ

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading