বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে নয়াপল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি মো: রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল যথাযথ ঘোষণা করে তাদের জামিন স্থায়ী জামিন দেন।

আদালতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, মো: সগীর হোসেন লিওন, মো: রায়হান প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির।

আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে আদালত জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের স্থায়ী জামিন দিয়েছেন।

গত ৮ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন বহাল রেখে স্থায়ী জামিন আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আদেশে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

৯ জানুয়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নয়াপল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় কারামুক্ত হন।

এর আগে ৪ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর ৮ জানুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ঠিক করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম। একই সাথে এ সময়ের মধ্যে মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা বেলবন্ড (জামিননামা) দাখিল করতে পারবেন না বলে আদেশে উল্লেখ করেন আদালত।

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি মো: রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জামিন দেন। পরে ৪ জানুয়ারি জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সর্বশেষ গত ২১ ডিসেম্বর তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। তবে আদালতের আদেশ না পাওয়ায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করতে পারছেন না বলে জানান তাদের আইনজীবীরা।

গত ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে তাদের নিজ নিজ বাসভবন থেকে তুলে নেয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর ডিবির কার্যালয় থেকে ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। গত ৭ ডিসেম্বর পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। এ মামলায় সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে চারবার জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের পক্ষে হাইকোর্টে জামিন করা হয়।

গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আসাদুজ্জামান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য ২৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১৫, ১২ ও ৯ ডিসেম্বর তিনটি আদালতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।

নয়া পল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় গত ৮ ডিসেম্বর দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ ৪৩৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading