সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি পূজা মণ্ডপে মূর্তির পায়ে পবিত্র কুরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, পুলিশের গুলি, হত্যাকাণ্ড এবং মন্দিরে আক্রমণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে প্যারিসের একটি হলে গত ৩১ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে “উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা” শিরোনামে কবিতা পাঠ ও আলোচনা । সাহিত্যের ছোটোকাগজ “স্রোত” এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাচিকশিল্পী সাইফুল ইসলাম সঞ্চালনায় এবং স্রোত সম্পাদক কবি বদরুজ্জামান জামানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কবিতা ছড়া সংগীত প্রবন্ধ এবং আলোচনায় অংশ নেন- কবি আবু যুবায়ের, বাচিকশিল্পী শর্মিষ্ঠা বড়ুয়া, সংগীতশিল্পী হোমায়রা শারমিন কাকলী, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রকাশ রায়, সংগীতশিল্পী ইসরাত জাহান ফ্লোরা, বাচিকশিল্পী মুনির কাদের, ছড়াকার লোকমান আহম্মেদ আপন, যুবনেতা এডভোকেট রমেন্দু কুমার চন্দ্র, বাচিকশিল্পী ও প্রাবন্ধিক মুহাম্মদ গোলাম মোর্শেদ, সাহিত্যানুরাগী আহমেদ সেলিম, সাংবাদিক শাহ সোহেল, বাচিকশিল্পী সাইফুল ইসলাম, কবি বদরুজ্জামান জামান, অভিনেতা সোয়েব মোজাম্মেল, সাংস্কৃতিক কর্মী রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ। উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করে স্বরচিত কবিতা, ছড়া এবং বিশিষ্ট কবিদের সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কবিতা পাঠ করা হয়। প্রবন্ধ ও আলোচনায় উঠে এসেছে- যখন কোন নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে তার ধর্মীয় পরিচয় সামনে এনে নিজের অধিকার আদায়ের চেষ্টা বা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে তখন সেই নাগরিক নিজেই নিজের নাগরিকত্বের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে ।

 

এক্ষেত্রে নাগরিকত্ব অধিকারের শক্তি স্বাভাবিকভাবেই খর্ব হয়ে যায়। একটি রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী ও বিভিন্ন চিন্তা ধারার মানুষের বসবাস থাকবে। প্রতিটি চিন্তাধারার মানুষ বা গোষ্ঠী রাষ্ট্রের মধ্যকার এক একটি স্বাতন্ত্র্য চরিত্র। প্রতিটি চরিত্রের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেই একটি রাষ্ট্রের সুন্দর স্বরূপ ফুটে ওঠে। রাষ্ট্রের মূল কাজ প্রতিটি মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তার সাংবিধানিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা। তবে কোন বিশ্বাস বা আদর্শের প্রভাব যদি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অন্যের অধিকার হরণে উদ্বুদ্ধ করে তা কঠোর হস্তে দমন ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সজাক থাকা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আরো বলা হয়- আমরা বিশ্বাস করি আমরা ধার্মিক। ধর্মান্ধ নই। ধর্ম পালন ও বর্জন মানুষের ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্র স্বীকৃত অধিকার। কিন্তু অন্য ধর্মের প্রতি আঘাত কিংবা আবমাননা করার অধিকার যেমন কোন ধর্ম কাউকে দেয়নি তেমনি কোন রাষ্ট্রও তার নাগরিকদের দেয়নি। তাহলে এ কাজটি কারা করে। নিশ্চয়ই একটি অশুভ শক্তি বা অপশক্তি। আর রাজনীতিতে যখন দুরবৃত্তবায়ন ঘটে তখন এই অপশক্তি তাদের অপতৎপরতা বিস্তারে সাহস পায়। তাই এই অমানুষদের বিরুদ্ধে আমাদের বিবেক বোধ জাগ্রত করতে হবে।

রাকিবুল ইসলাম/প্যারিস থেকে ।

 

 

 

আমাদের প্রতিবাদী হতে হবে আমাদের চর্চার মাধ্যমগুলীতে। আমাদের কবিতার প্রতিটি শব্দে লাইনে স্তবকে আমাদের গানের প্রতিটি কলিতে ছড়ার ছন্দে আমাদের লেখনিতে আরো বেশি প্রতিবাদী হতে হবে। এই ঘটনা সমূহ রাজনৈতিক সিদ্ধি অর্জনের জন্য সবসময় একটি গোষ্ঠী ঘটিয়ে থাকে । প্রকৃত ধার্মিক হিন্দু মুসলিম একাজ করতে পারেনা। যারা করে করে তারা কোন ধর্মের হতে পারেনা। তাদেরকে অশুভ শক্তি হিসাবে চিহ্নিত করে প্রতিহত করতে হবে । এবং রাষ্ট্রকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। তাই বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানানো হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading