করোনাভাইরাসে বিধ্বস্ত জনবহুল দেশ ভারত। প্রিয়জনদের কেড়ে নিচ্ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। একে একে মৃত্যু হচ্ছে আপনজনদের। কিন্তু শোক প্রকাশ করারও জো নেই। সঙ্গে সঙ্গেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। তাতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন পরিবারের বাকি সদস্যরা।

এই অবস্থার মধ্যেই ভারতের তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে সম্প্রতি একটি ঘটনা ঘটেছে। যে মর্মান্তিক ঘটনায় আঁতকে উঠছে দেশবাসী। তবে কঠিন এই বাস্তবতায় হয়তো কিছুই করার নেই, সবাই নিরুপায়! করোনা আক্রান্ত হয়ে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শোকে আচ্ছন্ন স্বামী। অনবরত কেঁদেই চলেছেন তিনি। প্রিয়জনকে হারানোর শোকে কাতর।

তবুও পাশে কেউ নেই। দায় যেন তারই একা! মাত্র ৩ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে শ্মশানে পৌঁছে দিতে হবে। স্ত্রীর মৃতদেহ বহনে গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স কিছুই মেলেনি। বেশি টাকা দেয়ারও সামর্থ নেই। তাও যেটুকু দিতে পারতো, তাতেও রাজি হয় না কেউ। কিন্তু কেউ এগিয়ে এলো না।

শেষে স্ত্রীর কাপড়েই তাকে জড়িয়ে মৃতদেহ কাঁধে তুলে নেন। কাঁদতে কাঁদতে ৩ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শ্মশানে পৌঁছান স্বামী। রবিবার তেলঙ্গানার কামারেড্ডিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, মৃত নারীর নাম নাগলক্ষ্মী। তিনি এবং তার স্বামী কামারেড্ডি রেলস্টেশনের কাছে থাকতেন।

অভাবের সংসার ছিল তাদের। গত কয়েক দিন ধরেই নাগলক্ষ্মী খুব অসুস্থ ছিলেন। করোনার চিকিৎসা করানো এই দম্পতির সামর্থের বাইরে ছিল। বাড়তি ওষুধের দামের কারণে তাও কিনতে পারেনি তার। পরীক্ষা করাও সম্ভব হয়নি। এমনিভাবে বিনা চিকিৎসায় রোববার নাগলক্ষ্মীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সঙ্গে শেষ বিদায়টা আরও মর্মান্তিক হয়েছে। শেষ সময়ে স্বামী ছাড়া কারও সহানুভূতি না পেলেও ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় দেশবাসীর সহমর্মীতা পেয়েছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading