আজকে রাজনীতি নিয়ে লেখার ইচ্ছা নেই , আজকে লাউ বেচবো আর বৈরাগী হবো। কেননা রাজনীতির লেখায় সত্য বললে কারো পক্ষে বা কারো বিপক্ষে যায় অথবা অন্যদিকে নিজের আদর্শের মারপ্যাঁচে পরতে হয়। কেননা নিজের ক্ষুদ্র জ্ঞানে ব্যালান্স করে লেখার সামর্থ্য নেই । তার চেয়ে বড়ো কথা হলো দীর্ঘদিন ইউরোপে বসবাস করায় , রাজনীতিতে এদের কিছু ভালো বিষয় চোখে পরায় বা এই ক্ষুদ্র জ্ঞানে ইউরোপিয়ানদের রাজনীতির ভালোকিছু স্টোর(জমা) হওয়ায় , দেশের রাজনীতিতে সেই ভালো অংশটুকু দেওয়ার ইচ্ছা প্রশমিত হয় । আর সে কারণেই টুকিটাকি লিখি । অন্যদিকে সেই কারণেই ব্যালান্স করাটা সম্ভবও হয় না। তাছাড়া সত্যি বলতে ইউরোপিয়ানদের মাঝে রাজনীতিতে ব্যালান্স বিষয়টি দেখা যায় না ( বা একান্তই কম), হয়তো সে কারণেই নিজের ইচ্ছে হয়না ( হয়তোবা) । বলতে গেলে বলা যায়, অনেকটা চরচড়ির ( এক প্রকার তরকারি) মত । যেমন , ভাঁজতে ভাঁজতে চরচড়ি হয় , অনেকটা সে রকমই দেখতে দেখতে ব্যালান্স করা একেবারেই অনিচ্ছা ।
জানি এই লাউ বিক্রি করতে আর বৈরাগী হওয়ার পথেও রাজনীতি চলে আসবে। রাজনীতি আসুক অসুবিধে নেই । রাজনীতিই যে সর্বে সর্বা , কেননা গণতন্ত্র একটি দেশের প্রাণ বা সুষ্ঠু চালিকাশক্তি, সুতরাং বলাই যায় একমাত্র রাজনীতিই তার মূল বা প্রোটন প্রান্ত । আবার অন্যদিকে নিজের আদর্শের যে কথা বললাম, সেটা তো গড়া হয়েছে সেই রাজনীতি দিয়েই। কি আর করা । এ যে কয়লার ময়লা , যতই ধুয়া হবে ততই কালো বের হবে বা কালোতে যে রঙই দেওয়া হোক , কালো কালোই থাকবে। আমি না হয় সেই কালোই থাকলাম।
কথা দিচ্ছি আজকে রাজনীতির বিষয়টি একটু কমই বা ছোট্ট করে বলবো। এখন আগে লাউ বিক্রি করি।
গল্পটি একটু বড়ো , তবে ছোটো করে বলার চেষ্টা থাকবে ।
চাচা ভাতিজার কথাপোকথন :
[ গল্পটি খুব মজা করে বলতো অস্ট্রিয়ার একসময়ের প্রবাসী সোহেল , বর্তমানে আমেরিকার প্রবাসী]
ভাতিজা : চাচা আজকে গাছের লাউ বিক্রি করতে বাজারে গিয়েছিলাম ।
চাচা : লাউতো বাজারেই বিক্রি করবি।
ভাতিজা : চাচা অনেক বড়ো লাউ তাই দাম বেশি কইরা ২০০ টাকা চাইছি।
চাচা : এত বড়ো লাউ বেশি তো চাইবিই।
ভাতিজা : এই লাউ এর খরিদ্দার ছিলো একজন পুলিশ অফিসার ।
চাচা : এতবড় লাউ পুলিশ অফিসারই তো কিনবো।এইটা তো গরিবে কিনবো না ।
ভাতিজা : চাচা এত দাম শুইন্না পুলিশ আমারে থাপ্পড় মারছে।
চাচা : একটা লাউ সেটার দাম ২০০ টাকা চাইবি ! থাপ্পড় তো মারবোই।
ভাতিজা : চাচা পুলিশ আমারে থানায় ধইরা নিয়া গেছে ।
চাচা : পুলিশ তো থানায়ই নিবো, বাড়িতে তো নিবো না
ভাতিজা : চাচা পুলিশ আমারে থানায় আটকাইয়া রাখবার চাইছে।
চাচা : থানায় তো আটকাইয়াই রাখবো। থানায় তো ঘোরাফেরা করতে দিবো না।
ভাতিজা : চাচা পুলিশরে তোমার নাম কইছি । তুমি আমার চাচা হও আর মাফ চাইছি। আমারে ছাইড়া দিছে।
চাচা : মুচকি হেসে, দেখতে হইবো না ভাতিজাটা কার ।
বাংলাদেশে এক সময়কার “আলোর পথে” বাংলা ছবির
রুনা লায়লার সেই বিখ্যাত গান মনে পরে নিশ্চয়ই
” সাধের লাউ বানাইলি মোরে বৈরাগী “। গানটির কথা কেন বললাম, লাউ যখন বেচলামই , এখন বৈরাগীর কথা বলি ।
বর্তমানে দেশে রাজনীতি নিয়ে মানুষের মনে বিতৃষ্ণা চলে এসেছে। জনমনে রাজনীতি নিয়ে সত্যি সত্যি অনেক আক্ষেপ দেখা যায় । বলা যায় জনমন থেকে রাজনীতিটাই এখন বৈরাগী হতে চলেছে। এটা মোটেও মঙ্গলজনক নয় বলেই মনে করি।
আগের কথা রাখতে ছোট্ট করে এখন রাজনীতির কথা বলি ।
দেশে বর্তমানে রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের হালহকিকত দেখে মনে ভীষণ ভাবে প্রশ্ন জাগে ,
*** স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেই সময়কার রাজনীতিবিদদের হালহকিকত ( চরিত্র,নাই বললাম) যদি বর্তমানের রাজনীতিবিদদের মতো হতো , তাহলে কি বাংলাদেশ স্বাধীন করা সম্ভব হতো ???
এখন আসি লাউ বেচার কাহিনীতে সেই চাচার মতো। দেখতে হইব না রাজনীতিবিদরা কাদের ছিলো। তারা ছিলো বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ , সুতরাং দেশ স্বাধীন না হইয়া যাইতো কই ? নেহাত সত্য হলো রাজনীতিবিদদের দূরদর্শিতার কারণেই আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ । তাই বলছিলাম, বর্তমানের রাজনীতিবিদরাও আমাদের । সুতরাং আমি তাদের উপরই ভরসা রাখি বা রাখতে চাই। এই রাজনীতি আর রাজনীতিবিদরাই এই দেশের আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হবেই হবে।
বুলবুল / Austria , Linz