ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে সময় লাগতে পারে। কারণ, এসব বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দোরাইস্বামী।
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেন।আগামী ৩০ মে দিল্লিতে জেসিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
পি কে হালদারের বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, তার বিষয়ে কথা হয়েছে। এটি দুই দেশের নিয়মিত সহযোগিতার একটি অংশ। দুই দেশের অপরাধীদের মোকাবিলার জন্য পারস্পরিক আইনি সহায়তাসহ নানা ধরনের কাঠামো রয়েছে।
দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তথ্য দিয়েছে। ভারতীয় সংস্থা ওই তথ্য যাচাইয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও অপরাধীদের দমনের জন্য সহযোগিতা রয়েছে।
পি কে হালদারকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অনুরোধ করেছে কি না জানতে চাইলে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘দেখুন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়। আমাদের কাছে যা তথ্য আছে, তার ভিত্তিতে একটা সময় বাংলাদেশকে জানানো হবে। বুঝতে হবে এটি কিন্তু বড়দিনের কার্ড বিনিময় নয়। আমি মনে করি, এ ধরনের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, সেটি আস্তে আস্তে হতে দিন। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি। এ তথ্য বাংলাদেশ থেকে এসেছে।’
এর আগে গত শনিবার পি কে হালদারকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। তার আগের দিনও পি কে হালদারের সম্পত্তির খোঁজে অভিযান চালায় ইডি।
শনিবার গ্রেপ্তারের পর পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। পরে আদালত সেই সময় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আজ মঙ্গলবার পি কে হালদারকে কলকাতার আদালতে তুলে আরও ১৪ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি কে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।