সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গাড়িতে বসে এক ভ্যানচালককে ‘বেতের বাড়ি’ দেওয়ার ঘটনায় নগরজুড়ে তোলপাড় চলছে।

শনিবার দুপুরে সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনার প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, সামনে দাঁড়িয়ে দুই হাত পেতে রেখেছেন এক ভ্যানচালক তরুণ। গাড়ির জানালা দিয়ে বেত উঁচিয়ে ওই চালকের হাতে বাড়ি দিতে উদ্যত হয়েছেন মেয়র আরিফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেয়র বেত দিয়ে ওই ভ্যানচালকের হাতে দুটি বাড়ি দিয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দাবি, তিনি বাড়ি দেননি। সড়কে ভ্যান রেখে মালামাল ওঠানো–নামানো করায় বেত উঁচিয়ে শাসিয়েছেন মাত্র।

শনিবার দুপুর দেড়টায় নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় সরকারি মহিলা কলেজ মার্কেটের বিপরীতে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুপুর দেড়টার দিকে মেয়র জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি দেখেন, একজন ভ্যানচালক তার গাড়ি দাঁড় করিয়ে মালামাল ওঠাচ্ছেন। এ সময় তিনি ওই চালককে ডেকে এনে তার হাতে দুটি বেতের বাড়ি দেন।

এ ঘটনার সমালোচনা করে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকে। তাদের ভাষ্য, এভাবে একজন নাগরিককে বেতের বাড়ি দিয়ে শাসানোর কোনো অধিকার জনপ্রতিনিধির নেই।

ওই ভ্যানগাড়ি ছিল একটি সিগারেট কোম্পানির। ওই কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ধ্রুব ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের চালকেরই ভুল ছিল। ভুল সময়ে ভুলভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে আমরা মালামাল সরবরাহ করছিলাম। তাই মেয়র মহোদয় আমাদের চালককে বেতের হালকা বাড়ি দিয়ে শাসিয়েছেন। যেহেতু ভুল আমাদেরই, তাই এ নিয়ে কোনো অভিযোগও নেই।’

এ ব্যাপারে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ঈদের আগে নগরীতে যানজট যেন না হয়, সে জন্য কয়েক দিন আগেও পরিবহণ শ্রমিকদের নিয়ে সিটি করপোরেশন সভা করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সকাল ১০টার আগে ভ্যানজাতীয় যানগুলোকে মালামাল ওঠানো–নামানোর কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু আজ দুপুর দেড়টার দিকে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন, ওই চালক দুটি ভ্যানগাড়ি দিয়ে মালামাল ওঠা–নামা করছেন। এতে সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে।

বেতের বাড়ি দেওয়ার কথা সত্য নয় দাবি করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘আমি ওই চালককে বেতের বাড়ি দিইনি। বেত উঁচিয়ে একটু শাসিয়েছি মাত্র। ভবিষ্যতে যেন এভাবে যান দাঁড় করিয়ে তিনি যানজট সৃষ্টি না করেন, পরে সেটি তাকে বুঝিয়ে বলেছি। অথচ বিষয়টি ভুল ব্যাখ্যা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ ছবিটি ছড়িয়ে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।’

Leave a ReplyCancel reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading