বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে না পারলে দেশের জনগণ স্বস্তি পাবে না। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি আয়োজিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার সকাল ১০ টায় এ অনশন শুরু হয়ে চলে বিকাল তিনটা পর্যন্ত। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে চেয়ার পেতে বসেন এবং কর্মীদের বাসার জন্য রাস্তার কার্পেট বিছিয়ে দেয়া হয়। নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা মৌখিক অনুমতিও পায়।

কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই ব্যানার ও ফেস্টুনসহ  মিছিল নিয়ে নগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং থানার নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে জড়ো হন। অনশনে নেতাকর্মীরা দ্রব্যমূল্য কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেন। এদিকে প্রতীকী অনশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, পল্টনসহ প্রেস ক্লাবের আশপাশে কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন সংস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।
বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম কমাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। কাল থেকে রোজা, কিন্তু সীমাহীন ব্যর্থতা আর সরকারের লোভের কারণে নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী। এই ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগকে সরাতে না পারলে জনগণ স্বস্তি পাবে না।তিনি বলেন, এই গণ অনশনের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে। এই সরকারকে জানাতে হবে, তাদের ওপর জনগণের আস্থা নেই, তাদের ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। পদত্যাগ করে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার কী করছে? তাদের লাগামহীন লোভ এবং তাদের সিন্ডিকেটের লোভের কারণে প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, অনির্বাচিত আওয়ামীলীগ সরকার আজকে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তাদের যদি আমরা পরাজিত করতে না পারি, তাদের যদি ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে না পারি, তাহলে এ দেশের মানুষের অস্তিত্ব থাকবে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, প্রমূখ।
এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের মহানগর নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading