নির্বাচন পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশ সুপারদের (এসপি) চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এসপিরা তাঁদের ওপর অর্পিত গুরুদায়িত্ব ‘সুষ্ঠু পরিকল্পনার দ্বারা’ পালনে সক্ষম হয়েছেন।

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন ৫০টি থানা ও প্রতিটি ইউনিটে গত শনিবার একযোগে ভোজের আয়োজন করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরে এই আয়োজন হয় রোববার। নির্বাচনে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের দায়িত্ব ‘সঠিকভাবে’ পালন করায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে সারা দেশে এই ভোজের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের এক অফিস আদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয়ের জন্য পুলিশের উপমহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সারা দেশকে চারটি ভাগে ভাগ করে আটজন কর্মকর্তাকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্বাচনের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর এই কর্মকর্তারাই পুলিশ সুপারদের ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদৃঢ় নেতৃত্ব পেশাদারি কর্মকৌশল ও দক্ষতা, কর্মনিষ্ঠা দূরদর্শিতা এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার দ্বারা অর্পিত গুরুদায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছেন।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা, নির্বাচন-পূর্ববর্তী আইনশৃঙ্খলা, নির্বাচন চলাকালীন ও পরবর্তী পরিস্থিতি দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করা এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। জননিরাপত্তা বিধানসহ দেশ ও জাতির প্রয়োজনে আপনার জনবান্ধব এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

চিঠির শেষে বলা হয়েছে, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে যে অবদান রেখেছেন, তা জনগণের প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বের সর্বোত্তম প্রতিফলন। একবিংশ শতাব্দীর উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনার জনকল্যাণকর ভূমিকার সফলতা কামনা করছি।’

তবে এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। তিনি গত রাতে বলেন, পুরো নির্বাচনপ্রক্রিয়াটি তদন্ত করে দেখা উচিত।

এদিকে গত শনিবার ইউনিটভিত্তিক হওয়া ভোজে সব পুলিশ সদস্যের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। প্রতিটি থানায় এই রান্নার আয়োজন করা হয়। খাবারের মধ্যে ছিল পোলাও, মুরগির রোস্ট, মুসলিম পুলিশ সদস্যদের জন্য গরুর মাংস, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য খাসির মাংস, ডিমভুনা, ডাল ও কোমল পানীয়।

ভোজের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (মিডিয়া) রুহুল আমিন বলেন, ‘এটা পুলিশের একটা রেগুলার প্র্যাকটিস। বড় ধরনের স্ট্যান্ড ওয়ার্ক বা টায়ারিং ডিউটির পর ফোর্সকে রিফ্রেশ করার জন্য এ ধরনের প্রোগ্রাম সব সময়ই নেওয়া হয়। এটা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন-সংক্রান্ত দায়িত্ব নিয়ে ফোর্স খুব টায়ার্ড ছিল, বিজি ছিল। জাস্ট সেটার পর একটা বিনোদনের ব্যবস্থা।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading