বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসটিতে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে সংগঠনটি। এর অংশ হিসেবে রোববার (৩১ মার্চ) শহিদ মিনারে সমাবেশে যোগ দেয়া শুরু করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আন্দোলনের মধ্যেই ছাত্র রাজনীতির দাবিতে ছাত্রলীগ এ সমাবেশ করছে।

এর আগে শনিবার (৩০ মার্চ) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সমাবেশের কথা জানান। এতে বলা হয়েছে, মৌলবাদী গোষ্ঠীর কালোছায়া মুক্ত করে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে এবং বুয়েট কর্তৃক গৃহীত অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচির আয়োজন করছেন তারা।

গত বুধবার রাত ২টার দিকে নেতাকর্মীসহ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। শিক্ষার্থীরা সংগঠনটির এমন পদক্ষেপকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েটে ফের রাজনীতি শুরুর তৎপরতা বলে উল্লেখ করেছেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন।

পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় অভিযুক্ত ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রহিম ওরফে ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে, ইমতিয়াজ রাব্বির বিরুদ্ধে বুয়েট প্রশাসনের নেয়া পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রলীগ। সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইমতিয়াজের আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিলের ঘোষণা করার সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-গণতন্ত্রকামী মানুষ ও ছাত্রসমাজ চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ বুয়েট প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে একটি অন্যায্য, অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ও সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত শিক্ষাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করছে।

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরবর্তীতে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই সময় আবরারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আবরার ফাহাদ হত্যায় অভিযুক্ত ১৯ জনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। একইসঙ্গে বুয়েটে সব দলের ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি।

Leave a ReplyCancel reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading