প্রথমেই আসি বিএনপির বিষয়ে :

যতটুকু জানলাম, দেখলাম এবং বুঝলাম, বলাই বাহুল্য আজকে ৩০ তারিখে বিএনপির ডাকে বেশ লোকজনের সমাগম হয়েছে। এদের সবাই যে বিএনপির সমর্থক, তা নিশ্চয়ই নয়। শত- হাজার আছে যারা নিরবে- নিবৃত্তে আওয়ামীর দুবৃত্তায়ন- দূর্ণীতি আর রাজনীতিকে রাজনীতির পথে চলতে না দেওয়ার বিপরীতে বিএনপির প্রতি দিনে দিনে সমর্থন দেওয়া লোকের সংখ্যাই বেশি বলে অনুমেয় হয়।

ধারনা থেকে বলছি :  বিএনপি বিষয়টি বেশ ভালোই অনুধাবন করে কেননা বিএনপিও এই স্বাধীন দেশে বর্তমানে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দল কিন্ত। সেই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার বিবেচনায় বিএনপি নিশ্চয়ই জানে এবং বুঝে, এই মানুষগুলো ভিন্নপথ না পেয়ে, বিএনপিকে সমর্থন করলেও, বিএনপির ক্ষমতার জন্য রাজপথে রক্ত ঝরাবে না।

তবে হ্যা বিএনপিকে বর্তমানে যে সমর্থন দিচ্ছে সেটা ততদিন দেবে, যতদিন তাদের ধারনায় থাকবে যে, বিএনপি ভালো রাজনীতির চর্চা করার একটি প্রয়াশ চালাচ্ছে। ঠিক ততদিন নিশ্চয়ই সমর্থন দিয়ে যাবে। তবে এর বিপরীত কিছু বিএনপি ঘটালেই তার পরেরদিন থেকে এমন সমর্থনের পাল্লা ধীরে ধীরে কমে আসবেই ( আপন বিশ্লেষণ)।

সুতরাং বলাই যায়, আজকের কর্মসূচীর পরে শান্তিপূর্ণভাবে সবাইকে ঘরে ফিরে যাবার নির্দেশটি সত্যিই ভালো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।  এমন সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে অনেক অনেক বেশি লাভবান হবেই হবে।

 

এবার আসি আওয়ামী লীগের কথায় :

কয়েকদিন পরপরই আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবকে কর্মী- দলের লোকজনের সাথে বিভিন্নভাবে রাগারাগি বা ধমকাধমকি করতে দেখা যাচ্ছে (কয়েকটি ঘটনা ভিডিও সহ লিখেছি)।

আজকেও তিনি একটি আওয়ামীর সমাবেশে রেগে গিয়ে (ইতিমধ্যেই ভিডিওটি ছড়িয়ে গিয়েছে) অন্য নেতা- কর্মীদের বলছেন,” মিঞা লজ্জা করে না- এখানে হাজার লোকও উপস্থিত নাই”।

ওবায়দুল কাদের সাহেবের বারবার এমন সব বচন থেকে বেশ স্পষ্ট হয় যে, আওয়ামী লীগে বরাবরের মতন মধু পানের নেতা- কর্মীর সংখ্যাটাই বেশি। অতীতেও বেশি ছিলো এবং বর্তমানে’তো কথাই নাই। ঝাকে ঝাকে উপস্থিত।

আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন যাবৎ রাষ্ট্রের ক্ষমতাশীন দল। এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে শুধু লুটরাজে লিপ্ত থাকলে, সমাবেশে বিরিয়ানি/ পোলাও/ কোরমা দিয়ে লোক সমাগম করতে হবে, ইহাই স্বাভাবিক বটে।

কেননা সবাই যখন দেখে কিছু গোষ্ঠি দলকে ব্যবহার করে চেটেপুটে খায়, তখন বিনা বিরিয়ানিতে কেউ আসবে না, ইহাও স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগের মতন বিজ্ঞ রাজনৈতিক দল বিষয়টি গভীরভাবে যদি ভাবতে পারে, পদক্ষেপ নেয়, তবেই দল  উপকৃত হবে। নতুবা আগামীতেও এমন রাগারাগি আর ধমকাধমকি করেই পার করতে হবে।

 

এবার আসি জামায়াত বিষয়ে :

শুক্রবার দিনটি আমাদের মতন সাধারণ জনগণের হাতে আর নেই। বর্তমানে শুক্রবারটি মনে হয় কেবলমাত্র ধর্মীয় রাজনীতির জন্য, ধর্মীয় লেবাসধারীদের জন্য নতুন করে বরাদ্দ হয়েছে স্বয়ং বিধাতার কাছ থেকে। শুক্রবার মানেই বায়তুল মোকাররম- কাকরাইল মসজিদ এলাকা আর ওয়াজকরদের মাতম।

রাজনীতিতে গোখরার বিষ যুক্ত জামায়াত নামক রাজনৈতিক দলটির এমন আক্রমণাত্মক আর ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে যারা সুপ্ত মনে খুশি হচ্ছেন, তাদের জন্য বলছি, এদের বিষ দাঁতের কামড় ভবিষ্যতে যে কারও ভাগ্য মিলতে পারে।

স্বাধীনতার বিরোধী পাক পেয়ারী জামায়াত নামক রাজনৈতিক দলটির কামড়ে এমনই বিষ যে, ” ওরা গাছের যে ডালে কামড় বসায়, সে ডালের পাতাও ঝরে এবং ফুলও ফোটে না “!

এই দলটির রাজনৈতিক কর্মে রাজপথের বাহাদুরীর হিসেব কষে, যে বা যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের সাথে গলায় গলায় মিলে রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে চাইবে, সেই রাজনৈতিক দলটিকেও ভবিষ্যতে বিষ দাঁতের ছোবল সইতেই হবে। হোক সেটা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির মতন বড় ও অভিজ্ঞতায় ভরা রাজনৈতিক দল। কেউই সেই ছোবল থেকে রক্ষা পাবেন না – না – না ।

জামায়াতের মতন বিষধর সাপ নিয়ে যারাই রাজনীতির হিসেবে বসবেন, দুইবার নয়, শতবার হিসেব করুন। নতুবা নিজেদের রাজনৈতিক কবর নিজেরাই অগ্রীম খুড়ে রাখুন। মাটি পাবেন কিনা, বলতে পারবো না। তবে অন্তত গর্তে যাবেনই।

রাজনীতিকে রাজনীতির পথে ফিরিয়ে আনুন হে আমাদের রাজনীতিবিদরা। আগামী বছরের নতুন দিনগুলোতে রাজনীতিবিদদের জন্য শুভ চিন্তার উদয় হোক, সেটাই নতুন বছরের কামনা। ইংরেজির শুভ নববর্ষ

বুলবুল তালুকদার 

যুগ্ম সম্পাদক- শুদ্ধস্বর ডটকম। 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading