ইউরোপের দেশগুলোয় নিকট ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক গ্যাসের মারাত্মক সংকট দেখা দিতে পারে। এজন্য ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার অতিসত্বর কমাতে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে অঞ্চলটির খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইএএ) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট মোকাবেলা করতে পারলেও পুরোপুরি নির্ভার থাকতে পারছে না ইউরোপ। সংস্থাটি সতর্ক করে বলছে, আসন্ন শীতে বাসগৃহ উষ্ণ রাখতে ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাড়তি জ্বালানির প্রয়োজন পড়বে। খবর এপি।

আইইএ বলছে, ইউরোপ গ্রীষ্ম মৌসুমে রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ থেকে কিছুটা লাভবান হয়েছে এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির অপ্রতুল শিপলোডের ফলে চীনের সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে, এ কারণগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটি বলছে, মৃদু আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও গত আগস্টে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম অত্যন্ত শীর্ষে উঠেছিল।

আইইএয়ের নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল বলেছেন, বর্তমানে আবহাওয়া স্বাভাবিক, গ্যাসের দামও কম। এছাড়া পর্যাপ্ত মজুদ নিয়ে আত্মতুষ্টির বিপদ নিয়ে এরই মধ্যে অনেকেই কথা বলতে শুরু করেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা এখনো পুরোপুরি সংকট থেকে বের হয়ে যাইনি। এজন্য দেশগুলোকে জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পুরোদস্তুর কাজ করতে হবে। নয়াবনযোগ্য জ্বালানিশক্তি বাড়িয়ে ও তাপবিদ্যুৎ কারখানার অবকাঠামোগত নির্মাণ উন্নয়ন করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সময়ে গ্যাসের চাহিদা কমাতে যথাসম্ভব পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।

ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে অধিকাংশ রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইন ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ফলে ইউরোপে শীতকালীন জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। বছরের প্রথমার্ধে রাশিয়ান গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিকের কাছাকাছি ছিল। দেশটি তখন থেকে গ্যাস সরবরাহের প্রায় সব প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিল, যা আগামী বছর একেবারেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসংখ্যান বলছে, যেখানে শীতকালীন মৌসুমে জ্বালানির চাহিদা বেশি থাকে, সেখানে আগামী গ্রীষ্মেই তিন হাজার কোটি ঘনমিটার গ্যাস ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে ইউরোপ। এছাড়া চিন্তার আরেকটি বিষয় হলো ইউরোপীয় অঞ্চলে ২০২৩-২৪ শীতের মৌসুমের আগে স্টোরেজগুলো পূর্ণ করতে আরো প্রায় অর্ধেক পরিমাণ গ্যাস লাগবে। স্টোরেজগুলো ৯৫ শতাংশ গ্যাস সংগ্রহ করা যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারপ্রধানরা শীতকালে গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সংরক্ষণ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিশক্তি বৃদ্ধির দিকে জোর দিচ্ছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading