রাজধানীর বনানীতে বিএনপির মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
আজ রাত পৌনে ৮টার দিকে বিএনপির কর্মসূচির শেষ দিকে এ হামলা চালানো হয়।

কর্মসূচিস্থলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ইট-পাটকেল ও লাঠির আঘাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ঘটনাস্থল থেকে জানান, বিএনপির কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। ৭টা থেকে ৮ পর্যন্ত মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে আমরা কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়। ইট-পাটকেল নিয়ে তারা আক্রমণ করে। তাবিথ আউয়ালসহ অনেকের মাথা ফেটে গেছে। অনেককে তারা লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে নারী কর্মীসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে দলের তিন কর্মী নিহতের প্রতিবাদে রাজধানীর নয়াপল্টনে ও বনানীতে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। বনানীর কাকলী থেকে গুলশান-২ নম্বর গোলচক্কর পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি ছিল। কিন্তু এর এক ঘণ্টার বেশি সময় আগে রাস্তায় জড়ো হন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশ ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হয়ে মিছিল করতে থাকেন। সেখানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম এ কাদের খান, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন ও বনানী থানা কমিটির সাবেক সভাপতি মো: মাসুদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বনানী কাঁচাবাজারের পাশে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতেও তাদের অবস্থান ছিল।

রাত ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে কর্মসূচির প্রধান অতিথি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রথমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী লাঠিসোটা নিয়ে একযোগে হামলা করলে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল। তাকে সাথে সাথে সেখান থেকে উদ্ধার করে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল জানান, বিএনপির কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই রাস্তার অপরপাশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ মিছিল করছিল। কিন্তু যখন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য প্রায় শেষ পর্যায়ে অপর পাশ থেকে এসে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছে। নারী কর্মীরাও আহত হয়েছে।

এদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির একই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। তবে এই স্পটে বিএনপি এক ঘণ্টার কর্মসূচি সংক্ষিপ্তভাবে পালন করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত আগস্টে ভোলায় পুলিশের গুলিতে বিএনপির দুজন নেতা-কর্মী নিহত হন। এরপর ২২ আগস্ট থেকে টানা কর্মসূচি শুরু করে দলটি। এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে একজন কর্মী নিহত হওয়ার পর ঢাকার ১৬টি জায়গায় ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading