আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধিতে আইন (বিশেষ বিধান), রেন্টাল-কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে সরকারের করা চুক্তি বাতিল করবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতি উত্তরণে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ১২ দফা পদক্ষেপও তুলে ধরেছে দলটি।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এখন শহরে দু-তিন ঘণ্টা ও গ্রামে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে, যা জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির মধ্যে লোডশেডিংয়ে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যুক্ত হয়েছে। মানুষ আজ দিশেহারা, তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে।’

জ্বালানিখাতের ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎখাতের এ বিপর্যয়, রিজার্ভ সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস। এ দায় কাঁধে নিয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে আমরা দেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করব। আশার বাণী হলো- বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবারহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সব কালা-কানুন বাতিল করব। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল করা হবে। স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।’

ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। উৎপাদনের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন দ্রুত স্থাপন করা হবে। বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি, জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জ্বালানিনীতি গ্রহণ করব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেইস লোড পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্পব্যয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন গড়ে তোলা, বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর সংস্কার ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন-২০৩০-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading