বলা হয়ে থাকে- দেশে চলচ্চিত্রের সেই সুদিন আর নেই। একটা সময় ছিল যখন ঈদ এলে চলচ্চিত্রপাড়ায় কাজের গতি বেড়ে যেত। দর্শক ঈদের সিনেমা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। অনেক আগে থেকেই এ জন্য প্রযোজক, পরিচালক, কলাকুশলীরা প্রস্তুতি নিতেন। ঈদের ছবি মানেই ছিল স্পেশাল বিনোদন।
সোহেল রানা একাধারে প্রযোজক এবং পরিচালক। অভিনেতা পরিচয়ের বাইরেও এই ড্যাশিং হিরোর সিনেমা পাড়ায় যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে। তিনি এক সময় চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি ও পরিচালক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সময় ঈদে কোন সিনেমা মুক্তি পাবে, কোনটি পাবে না তিনি সিদ্ধান্ত নিতেন। বলাবাহুল্য এ নিয়ে চলতো তুমুল প্রতিযোগিতা। সেগুলোও সামলাতে হতো তাকে।
এ প্রসঙ্গে সোহেল রানা সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করেছেন।
এই অভিনেতা বলেন, ‘আমাদের সময় সিনেমা হল ছিল এক হাজার ছয়শ। এখন সিনেমা হলের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তখন কোন হল কী সিনেমা নেবে, কয়টা সিনেমা ঈদে মুক্তি পাবে এ নিয়ে গণ্ডগোল হতো। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মিটিংয়ের পর মিটিং করতে হতো।’
মূলত ঈদের বাজার ধরতে চাইতো প্রযোজকেরা। তারা জানতেন ঈদে সিনেমা মুক্তি দেওয়া মানে বিনিয়োগ উঠে আসা। কিন্তু একসঙ্গে অনেক সিনেমা মুক্তি দেওয়া মানে ব্যবসায় ক্ষতি। ফলে একেক সময় একেকভাবে সমস্যার সমাধান করা হতো উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, ‘এমনও হয়েছে টস করে সিনেমা মুক্তি দিয়েছি। একই সময়, একই শিল্পী, একই ধরনের সিনেমা হলে সিদ্ধান্ত দেওয়া কঠিন হতো। তখন টস করতাম। আর এখন তো সিনেমা পাওয়াই মুশকিল। আমরা মাঝে মাঝে প্রযোজক সমিতি থেকে বলে দিতাম, চারটার বেশি সিনেমা মুক্তি দেওয়া যাবে না।’
কিন্তু অনেকেই এই সিদ্ধান্ত মানতে চাইতো না। ফলে বিচার বসতো। এখন সিনেমার সেই দিনগুলো অতীত। ‘এখন যেমন পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে ঈদি চাওয়া উঠে গেছে, তেমন ফিল্মের চাওয়াটাও উঠে গেছে। এখন গরু কত দিয়ে আনা হয়েছে? কার গরু কেমন? এসব নিয়ে আলোচনা হয়। আমাদের সময় হলে কোন সিনেমা যাচ্ছে? কোনটা কেমন সিনেমা? এ নিয়ে আলোচনা হতো।’ বলেন এই চিত্রনায়ক।