১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিতর্কিত একটি গোল করেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল ‘ঈশ্বর’ দিয়েগো ম্যারাডোনা। যেটি ‘হ্যান্ড অব গড’ নামে পরিচিতি। ওই ম্যাচে যে জার্সি পরে ম্যারাডোনা খেলেছিলেন সেই জার্সি তোলা হয়েছিল নিলামে। সেটি বিক্রিও হয়েছে রেকর্ড দামে। কিংবদন্তির জার্সিটির মূল্য উঠেছে ৯২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৬ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৭ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬৭২ টাকা। নিলামে বিক্রি হওয়া কোনো ক্রীড়া স্মারকের এটিই সর্বোচ্চ দাম।

ইএসপিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনে ম্যারাডোনার জার্সিটি নিলামে তুলেছিল নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সাদারবিস। ঘোষণা অনুযায়ী ৪ মে ছিল বিডিংয়ের শেষ দিন। ক্রেতার নাম অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি।

এর আগে ক্রীড়াজগতে ম্যাচে পরা কোনো জার্সির নিলামে সর্বোচ্চ মূল্য উঠেছিল ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক ইয়াঙ্কিজ কিংবদন্তি বেব রুথের বেসবল জার্সি এই দামে বিক্রি হয়েছিল।

একই বছর নিউইয়র্কে হাতে আঁকা অলিম্পিক ইশতেহার নিলামে ৮৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। এতদিন নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি ক্রীড়া স্মারক ছিল সেটি।

ম্যারাডোনা তার এই জার্সিটি পরেছিলেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আর্জেন্টিনার ২-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচটিতে ম্যারাডোনা করা দুটি গোলই স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়।

এর একটি পরিচিত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল নামে। লাফিয়ে হাতের ফ্লিকে ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে পরাস্ত করেন ম্যারাডোনা। ওই গোলের চার মিনিট পর চোখ ধাঁধানো দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। যেটি পরিচিত ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে।

২০২০ সালের নভেম্বরে না ফেরার দেশে চলে যান ম্যারাডোনা। বিতর্কিত ওই গোল নিয়ে তিনি বলেছিলেন, গোলটি ম্যারাডোনার সামান্য মাথা এবং ইশ্বরের সামান্য হাত দিয়ে করা।

জার্সিটি গত ৩৫ বছর ধরে ছিল ইংল্যান্ডের সাবেক মিডফিল্ডার স্টিভ হজের কাছে। ম্যাচের পর ম্যারাডোনা তার সঙ্গেই জার্সিটি বিনিময় করেছিলেন। হজের কাছ থেকে জার্সিটি নিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নিজেদের ফুটবল সংগ্রহশালায় রেখেছিল দু’দশক।

২০০২ সাল থেকে এটি ইংল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরে রাখা ছিল। গত ৬ এপ্রিল সাদারবিস জার্সিটি নিলামে তোলার ঘোষণা দেয়। এই বছরের শুরুর দিকে ৫৯ বছরের হজ জার্সিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। লন্ডনের একটি নিলাম সংস্থাকে ম্যারাডোনার ওই জার্সিটি বিক্রির দায়িত্ব দেন তিনি। গত ২০ এপ্রিল থেকে জার্সির নিলাম শুরু হয় অনলাইনে। চলে ৪ মে পর্যন্ত।

হজ বলেছেন, ‘গত ৩৫ বছর আমি এই বিখ্যাত জার্সির গর্বিত মালিক ছিলাম। খেলার শেষে ম্যারাডোনার সঙ্গে জার্সি বদল করার সুবাদে ওটা আমার কাছে এসেছিল। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরার বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ অবশ্যই আমার জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি। ম্যারাডোনা সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন। ২০ বছর সাধারণ মানুষ জার্সিটা দেখার সুযোগ পেয়েছেন সংগ্রহশালায়। এটাও আমার কাছে তৃপ্তির।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading