ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও নিহতের ঘটনায় লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখসহ আটজনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার নৌ আদালত।

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকার নৌ আদালতের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) জয়নাব বেগম এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন—ওই জাহাজের ইনচার্জ মাস্টার রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহ, সেকেন্ড মাস্টার খলিলুর রহমান, সেকেন্ড ড্রাইভার আবুল কালাম, শামীম আহাম্মেদ, রাসেল আহম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি। দুজন চালক ও দুজন মাস্টার ছাড়া বাকিরাও নৌযানটির মালিক বলে জানা গেছে।

এদিন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ১৯৭৬ (সংশোধিত ২০০৫) এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এসব ধারায় আসামিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সদরঘাট থেকে যাত্রীসহ এমভি অভিযান-১০ যাত্রীবাহী নৌযানটি বরগুনা জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পথে দিবাগত রাত পৌনে ২টায় সদরঘাটে কিছু যাত্রী নামিয়ে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেয় বলে বিআইডব্লিউটিএ পরিবহন পরিদর্শক থেকে জানা যায়।

লঞ্চটি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চ থেকে উদ্ধার হওয়া জীবিত যাত্রী এবং লোকমুখে জানা যায়। পরে ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীর লঞ্চঘাটের অনেক আগেই অনেক যাত্রী আগুনের পরিস্থিতি দেখে নদীতে ঝাপ দেন। এরপর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে লঞ্চটির কেবিনসহ সবই পুড়ে যায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ইনচার্জ মাস্টার, ইনচার্জ ড্রাইভার ও সেকেন্ড ড্রাইভার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর নৌযানটির ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর পরই আগুন নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় নৌযানটি আগুনে পুড়ে যায় এবং ৪২ জন যাত্রী আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়া আনুমানিক দেড়শ জন যাত্রীকে বিভিন্ন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া নৌযানটিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না, পর্যাপ্ত সংখ্যক লাইফ বয়া ছিল না, পর্যাপ্ত সংখ্যক বালির বাক্স ও বালতি ছিল না এবং ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে অনেকগুলো ডিজেল বোঝাই ড্রাম, রান্নার জন্য সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা ছিল, যা অধ্যাদেশের সংশোধনী ২০০৫ এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারার পরিপন্থি।

নৌযানটিতে পর্যাপ্ত বালির বক্স ও বালতি ছিল না এবং ইঞ্জিনরুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে অনেকগুলো ডিজেল বোঝাই ড্রাম রান্না করার জন্য সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা ছিল, যা অত্র অধ্যাদেশের ৫৬, ৬৬ ও ৭০ ধারার পরিপন্থি।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading