ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনির অসুস্থতার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চার্জগঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জনুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম সময় আবেদন মঞ্জুর করে নতুন এ তারিখ ঠিক করেন।

পরীমনির অসুস্থতা সম্পর্কে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী সময় আবেদন করে বলেন, ‘পরীমনি আদালতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার ভার্টিগো রোগটি বৃদ্ধি পায়। তিনি গাড়ির মধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে যান। তাই তাকে আবার বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই আমরা চার্জশুনানি পেছানোর আবেদন করেছি। শুনানি শেষে আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২ জানুয়ারি চার্জশুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন।’

মামলার অপর দুই আসামি- পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপু ও মো. কবীর হাওলাদার আদালতে হাজিরা দেন।

এর আগে পরীমনিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৪ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা। এরপর গত ১৩ অক্টোবর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট আমলে নেয়।

এরও আগে গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪টার পর বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। ওই সময় বাসা থেকে ১৯টি বোতলে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক স্লট এলএসডি নামক মাদক জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় র‌্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। তদন্তকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামীয় মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে।

অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহের বিষয়ে বলা হয়, পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দকৃত মাদকদ্রব্য মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ ছাড়া জব্দকৃত গাড়ি পরীমনি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন। যা তিনি ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে কিনেছিলেন।

উল্লেখ্য, পরীমনি গত ৪ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত ৫ আগস্ট চার দিনের ও গত ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুদিনের রিমান্ড পাঠান আদালত। ওই রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে মামলায় তৃতীয় দফা গত ১৯ আগস্ট ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ওই রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট পরীমনিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ কারাগারে থাকা পরীমনিকে অসুস্থ, নারী, অভিনেত্রী, মাদকের পরিমাণ বিবেচনায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন প্রদান করে। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি কারামুক্ত হন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading