বলিউডে কি কখনও ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছেন নাসিরউদ্দিন শাহ? সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে নাসির বলেন, “আমি জানি না বর্তমানে ইসলাম ধর্মাবলম্বী অভিনেতারা ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও প্রকার বৈষম্যের শিকার কি না। আমি মনে করি এখানে আমাদের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে একটিই ঈশ্বর। সেটা হল ধন। তুমি যত বেশি টাকা এনে দিতে পারবে, তোমাকে তত বেশি শ্রদ্ধা করা হবে।” এই প্রসঙ্গে বলিউডের তিন খানের উদাহরণ দিয়েছেন নাসিরুদ্দিন।

ইন্ডাস্ট্রিতে বৈষম্যের শিকার হননি ঠিকই, কিন্তু ইদানীং সেখানে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। নাসিরুদ্দিনের কথায়, “সরকারের হয়ে কথা বলবে, এমন ছবি তৈরি করার জন্য বেশি উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। সেই সব ছবি তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্যও করা হচ্ছে।”

এ প্রসঙ্গেই তিনি বর্তমানে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অবস্থার সঙ্গে হিটলারি জমানায় জার্মানির তুলনা করেছেন। বলেছেন, সেই সময়ও বিশ্বমানের পরিচালকদের নাৎসি আদর্শ নির্ভর ছবি তৈরি করতে বলা হত।

কথার ফাঁকে এল আফগানিস্তানের প্রসঙ্গও। কাবুলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি বিপাকে পড়েছিলেন নাসিরুদ্দিন। কিছু দিন আগে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “আফগানিস্তানে তালিবান শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও বিশ্বের কাছে তা চিন্তার বিষয়। ভারতীয় মুসলিমদের একটি অংশ এই বর্বরদের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি উদ্‌যাপন করছে। তা যথেষ্ট বিপজ্জনক।” প্রবীণ অভিনেতার এই মন্তব্যের নিন্দা করেন অনেকেই। এর পর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নাসিরুদ্দিন বলেন, “আমি তাঁদের কথা বলছিলাম, যাঁরা প্রকাশ্যে তালিবানকে সমর্থন করেন। ওরা অতীতে যা করেছে, সেটা দেখে আমাদের প্রত্যেকেরই চিন্তিত হওয়া উচিত।’’

তিনি জানিয়েছেন, তালিবানের প্রতি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একাংশের সমর্থন দেখে তিনি ব্যথিত। এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার জন্য দক্ষিণপন্থীদের থেকে তিনি বাহবাও পেয়েছেন। তবে সে সব নিয়ে ভাবিত নন তিনি। নিজের অবস্থানে অনড় থেকে নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, কিছু মানুষের তালিবানকে সমর্থন করা নিয়ে তিনি যা বলেছেন, তা সঠিক। তাঁর কথায়, “দাবানল ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় নেয় না।”

এনডিটিভি-র ওই সাক্ষাৎকারে নাসির জানিয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়াই গো-হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল। তাঁর কথায়, “আরও চিন্তার বিষয় হল, যাঁরা এই মানুষগুলোর ক্ষতি করেন, তাঁদেরকেই আবার অভিনন্দন জানানো হয়।” সুত্র, আনন্দবাজার পত্রিকা ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading