দেশে যে ধরনের বিভেদের রাজনীতি চলছে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য যদি কখনও প্রযোজন হয়, তাহলে তিনি যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলতে পিছপা হবেন না, সেই সুরও শোনা গেল আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের গলায়। “প্রয়োজনে ফের বন্ধু ইমরানের সঙ্গে কথা বলব”- বৃহস্পতিবার এমনটাই বলেন মুনমুন। প্রসঙ্গত দিন কয়েক আগেই গেরুয়া শিবিরের তরফে তৃণমূল নেত্রীকে বিঁধে মন্তব্য করা হয়েছিল, “শুনছি, মুনমুন সেনের প্রচারে ইমরান খান আসছেন!” তাই মুনমুনের এদিনের মন্তব্যকে প্রত্যুত্তর হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
সুচিত্রা-কন্যা বৃহস্পতিবার বলেন, “ইমরান আমার বন্ধু। আমরা একে অপরের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নই। তবে, দেশে যে ধরনের বিভেদের রাজনীতি (পাকিস্তান বিরোধী জাতীয়তাবাদ) বর্তমানে চলছে তা ভয়ঙ্কর।” দু’দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য দরকার পড়লে তিনি কি ইমরানের সঙ্গে কথা বলবেন? তৃণমূল নেত্রীর স্পষ্ট জবাব, “কেন বলব না? আরে, আমরা তো বন্ধু।”
তবে, মুনমুন নিজে যে উদ্যোগ নিয়ে পাক-প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সঙ্গে কথা বলতে যাবেন না, একথাও এদিন সাফ জানান তিনি। তাঁর মতে, দেশে আরও অনেক সুযোগ্য নেতা রয়েছেন। ফলে, তাঁকে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে না বলেই তিনি মনে করেন। পাশাপাশি মুনমুন সেন এও বলেন যে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ভীষণ বিচক্ষণ এবং বড় মাপের নেত্রী। তিনি কখনই আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ব্যবহার করে এমন পদক্ষেপ নিতে বলবেন না আমাকে।” আর তাছাড়া কলকাতায় ইমরানের প্রচুর বন্ধু রয়েছে এবং তাঁর স্বামীও ইমরানের বন্ধু।
বছর কয়েক আগে, ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে শেষ ইমরানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল মুনমুনের। প্রসঙ্গত, আট ও নয়ের দশকের ইমরান-মুনমুন চর্চা ফের আলোচনায় আসে বালকোট পর্ব পরবর্তী ভোটের মরশুমে। সম্প্রতি, তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে বাংলাদেশের দুই অভিনেতা ফিরদৌস ও গাজি নূরের প্রচার করাকে কটাক্ষ করেছিলেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সেই প্রসঙ্গেই এসেছিল ইমরানের কথা। এদিন মুনমুন বিজেপির প্রতি সেই জবাব-ই ছুঁড়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারই আসানসোলের প্রচারে গিয়ে মুনমুন সেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে বিঁধে ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, “গান শুনে ভোট দেবেন না! অনুষ্ঠানে যদি গান শুনতেই হয়, তাহলে বাংলার শিল্পীদের গান শুনুন। এবার গানের মানুষকে নয়, ভোট দিন কাজের মানুষকে।” তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের প্রচারে ‘গানই’ এখন গান পয়েন্টে। গানের অনুষ্ঠান করে টিকিট বিক্রি করে ফান্ড তৈরির প্রস্তাবও দেন মুনমুন। পাশাপাশি এদিন তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে বলব যেন আমাকে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য করে দেয়। তাহলেই এই শিল্পাঞ্চলের জন্য অনেক কাজ করতে পারব। কারণ, কোল স্টিল এয়ার ইন্ডিয়ার মতো শিল্পসংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক হয় সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির। আমি সেই প্রস্তাব কমিটির কাছে রাখতে পারব। তবেই শিল্প কারখানাগুলি খোলার সম্ভবনা তৈরি হবে। কয়লাঞ্চলে স্কুল হবে।”
শুদ্ধস্বর/আইপি