শুরু হচ্ছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারনা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার থেকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন প্রার্থীরা। আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রাথীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রার্থীরা স্ব স্ব এলাকায় ছুটছেন। গণসংযোগ করছেন। নিজ মার্কার পক্ষে ভোট চাইছেন জনসাধারণের কাছে। প্রচলিত ভাবে ভোটের বছর নিয়ে এক ধরনের আগ্রহ জেগে উঠে সারা দেশের মানুষের। নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রচার প্রচারণায় বাজার জুড়ে বইছে এখন উৎসবের আমেজ। শহর, গ্রাম গঞ্জের চায়ের দোকানে, মাঠে ময়দানে নানা জল্পনা কল্পনা চলে প্রার্থীদের বিগত দিনের কাজের হালখাতা নিয়ে। ভোটাদের মনোযোগ আকষর্ণে দিনরাত কৌশলী প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীগণ। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে মহাব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। মনোনয়ন দাখিল ও প্রতীক বরাদ্ধের পর থেকেই বাজার জুড়ে শুরু হয়েছিল জোর প্রচার প্রচারনা। চলছে নানা মুখরোচক শ্লোগান সম্বলিত মাইকিং। প্রচারণাকারীরা সাধারন ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নানা ধরনের রসালো শ্লোগানও দিচ্ছেন। চায়ের স্টল, হোটেল থেকে শুরু করে বাজারের অলিগলি এখন নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা সরগরম। পোস্টার ও ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে হোটেল, অলিগলির মোড়, প্রতিটি বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ পুরো বাজার। এবারের নির্বাচনে অন্যবারের চেয়ে প্রার্থীসংখ্যা বেশি। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুন ভোটার। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা, লিফলেট বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রার্থীরা গণসংযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ওঠান বৈঠক করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ সময় তিনি ভোটারদের দেন নানান প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনী প্রচারণায় এবার নতুন যোগ হয়েছে সমাজের বিভিন্ন বিয়ে শাদী, মৃত ব্যক্তির জানাযা, ওয়াজ মাহফিলসসহ সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। প্রার্থীরা এসব সামাজিক অনুষ্ঠানের খবর পেলে ছুটে যাচ্ছেন। কোন মৃত ব্যক্তির জানাযার খবর পেলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। উপস্থিত হয়ে শোক জানানোর পাশাপাশি নিজেরে জন্য ভোট চাইতেও ভুল করছেননা। সরকার দল, বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের নেতা কর্মীদের আনা গোনা বেড়ে যায় নিজ নিজ এলাকাতে। এ হলো বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সময়ের চালচিত্র। নৌকা আর ধানে কার কত জনপ্রিয়তা রয়েছে তার একটি চিত্র ফুটে উঠবে। তাই এ নির্বাচনকে ঘিরে দুই প্রতিদ্বন্ধী দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক তোড়জোড়। প্রধান দুই দলের প্রার্থীসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা শুরু করে দিয়েছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি পাড়া মহল্লা ও অলিগলিতে চলছে এক প্রকার উৎসবের আমেজ। নির্বাচিত হলে কি ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড করবেন এ নিয়ে নানা ধরনের কথার ফুলঝুড়িও ছুড়ছেন সবাই। চা দোকান ও বাজার গুলোতে সাধারন মানুষের মাঝেও চলছে আলোচনা সমালোচন। কে নির্বাচিত হলে ভাল হবে। কে নির্বাচিত হবেন। কোন দলের প্রার্থী বেশি নির্বাচিত হবেন মূলত এসব বিষয় নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচন। প্রার্থীদের বাড়ি ঘরও ভোটারও নেতা কর্মীদের পদচারনায় সরব হয়ে উঠেছে। এক কথায় নির্বাচনী আমেজে মুখরিত বাংলাদেশ। নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য করা এবং নাগরিকদের ভোটাধিকার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন কে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে সবার আগে।”আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিবো” এ শ্লোগানকে সামনে নিয়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে। আর এর জন্য জনগণের সম্পৃক্ততাকে বাড়াতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে যাবার পথে সংসদে শক্তিশালী সরকার এবং বিরোধী দল থাকা খুবই প্রয়োজন।
লেখক: আবু জাফর শিহাব (এল এল বি)