বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর একাধিক বায়োপিক, ডকুফিল্ম নির্মাণ করছেন একাধিক তরুণ নির্মাতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবন নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘শেখ হাসিনা দ্য লিডার’ ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়ছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নিয়ে প্রথমবারের মতো নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হাসিনা, অ্যা ডটারস টেলে’ দেখা যাবে অনন্য সাধারণ এক ব্যক্তিত্বকে। যিনি চেনাজানা প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরিচয়ের বাইরের এক ভিন্ন মানুষ।
‘হাসিনা, অ্যা ডটারস টেল’ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে অনেকটা নিরবেই। ৭০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনাকে একজন মমতাময়ী মা, স্নেহময়ী বোন এবং দায়িত্বশীল একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী ১৬ নভেম্বর চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমা, স্টার সিনেপ্লেক্স,  মধুমিতা এবং চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন সিনেমা হলে। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ও অ্যাপেলবক্স ফিল্মস-এর যৌথ প্রযোজনায় এটি নির্মাণ করেছেন রেজাউর রহমান খান পিপলু। ছবিটির চিত্রগ্রহণে ছিলেন সাদিক আহমেদ।
পরিচালক রেজাউর রহমান খান পিপলু বলেন, ‘আমি কিন্তু এই কাজটা করার সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কাজ করিনি। একজন সাধারণ শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যাকেই দেখছি। এর বেশি আর কিছু দেখার দরকার নেই। আমার চলচ্চিত্রে  শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে যাইনি। আমাকেও সেই স্বাধীনতা তিনি দিয়েছেন। বলেছেন, ছবিটাকে আমি যেভাবে দেখতে চাই, সেভাবেই যেন কাজটা করি। বাঁধা-ধরা  কোনো ব্রিফিং ছিল না। এছাড়া কাজটি যেহেতু একজন পলিটিক্যাল ফিগার নিয়ে, এটার ইতিহাস নিয়ে বেশ রিসার্চ করতে হয়েছে। এই রিসার্চ করতে আমাদের বেশ কিছু সময় চলে গেছে।’ নির্মাতা আরো জানান, ডকুফিল্মটিতে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তার পরিবারের সদস্যদের দেখা যাবে। উঠে আসবে শেখ হাসিনার সাধারণ জীবনের অসাধারণ কিছু মুহূর্ত। যেখানে তিনি কখনও মেয়ে, কখনও মা, কখনও বোন আবার কখনও আমজনতার নেত্রী হিসেবে দেখা দেবেন।
অন্যদিকে ‘শেখ হাসিনা দ্য লিডার’ তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন ফয়েজ রেজা। ১১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডব্যাপ্তি এই তথ্যচিত্রের গবেষণা করেছেন সাজিদ রায়হান, ধারা বর্ণনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম, মিউজিক কম্পোজিশন করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু, সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন তামান্না তাসমিয়া তুয়া। তথ্যচিত্রটির শুরুতে দেখানো হয়েছে- ১৯৮১ সালে ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে কিভাবে দলকে পুনরায় গড়ে তুললেন, তার চিত্র। এরপর সাধারণ মানুষের ভাত-কাপড়ের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিয়ে রাজপথে শেখ হাসিনার আন্দোলন, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ১৯৯৬ সালে ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের চিত্র। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দারিদ্র্যতাকে বাংলাদেশের মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা দূর করার জন্য কিভাবে সংগ্রাম ও পরিশ্রম করেছেন, তা দেখানো হয়েছে।
অতি সাধারণ এক বাঙালি বধূ থেকে শেখ হাসিনা কেমন করে হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের স্বপ্নহীন মানুষের আশা- আকাঙ্খার প্রতীক। অন্ন, বস্ত্র, চিকিত্সা ও আশ্রয়ের অভাবে পীড়িত মানুষকে কিভাবে নতুন প্রাণ শক্তিতে উজ্জীবিত করলেন। একটি অনুন্নত দেশে প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম করে কিভাবে আদায় করলেন সমাজের বঞ্চিত মানুষের অধিকার। সুদৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে কিভাবে সীমিত সম্পদের ভেতর থেকে একটি দরিদ্র  দেশকে মধ্যম আয়ের পথে এগিয়ে নিলেন। কিভাবে আত্মমর্যাদাশীল জাতিতে রুপান্তরিত করলেন বাংলাদেশের মানুষকে। তথ্যচিত্রটিতে সেই সত্য তুলে ধরেছেন নির্মাতা ফয়েজ রেজা। ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে তথ্যচিত্রটি। পাবলিক লাইব্রেরিতেও এটি প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নির্মাতা মাসুদ পথিক বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রের কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনকেই তুলে ধরেছেন। এর সাথে একটি বিশেষ সাক্ষাত্কার সংযুক্ত করবেন তিনি।
নির্মাতা মাসুদ পথিক বলেন,‘এই কাজটি আমার পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই করা। ইন্টারভিউ অংশটুকু ধারণ করে নতুন বছরে ছবিটি রিলিজ করব। এর পাশাপাশি আমার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। সেটার ব্যাপারে রিসার্চের কাজ চলছে পুরোদমে।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading