নাইকো দুর্নীতি মামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও আদালতে হাজির করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৯ এ এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির হয়ে তিনি এ দাবি করেন।

আদালতের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও নাইকো দুর্নীতি মামলায় আসামি ছিলেন। কাজেই তাকেও এখানে হাজির করা হোক।’

জবাবে আদালতের বিচারক মাহমুদুল কবির বলেন, ‘এই মামলায় শেখ হাসিনা আসামি নন। তাই তাকে হাজির করার প্রশ্নই আসে না।’

শুনানি শেষে বিচারক মাহমুদুল কবির আগামী ১৪ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

এদিন এই মামলার অন্যতম আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন।

অবশ্য শুরুতে মওদুদ আহমদ শুনানি না করার জন্য আদালতে একটি দরখাস্ত করেছিলেন। কিন্তু, আদালত সে দরখাস্ত নামঞ্জুর করে তাকে শুনানিতে অংশ নিতে নির্দেশ দেন।

এর আগে এ মামলায় হাজিরার জন্য খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে কারা আদালতে নেয়া হয়। শুনানি শেষে তাকে আবারও রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। যদিও গত ৬ অক্টোবর থেকে তিনি বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছিলেন। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

আসামিপক্ষ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট ওই বছরের ৯ জুলাই এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং রুল দেন। প্রায় সাত বছর পর ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করেন।

একই সঙ্গে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক আমিনুল ইসলাম ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। এরই মধ্যে গত ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading