শৌচকর্ম করার সময় ভূমিধস, ধানবাদের খনি এলাকায় মাটির নীচে তলিয়ে মৃত্যু তিন মহিলার

কয়লাখনি এলাকায় শৌচকর্ম করতে গিয়ে ভূমিধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হল তিন মহিলার। রবিবার ভারতের  ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে ঘটনাটি ঘটেছে। মাটির নীচে জ্যান্ত অবস্থাতেই চাপা পড়ে যান তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় কয়লাখনি এলাকার একটি ফাঁকা জমিতে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন ওই তিন মহিলা। তখনই জমি ধসে মাটির নীচে চাপা পড়ে যান এক মহিলা। তাঁকে সাহায্য করতে গিয়ে বাকি দু’জন মহিলাও মাটির নীচে চাপা পড়েন। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃত তিন মহিলার নাম, পার্লা দেবী, থান্ধি দেবী এবং মান্দাভা দেবী। তাঁদের তিন জনেরই বাড়ি ধানবাদের গন্ডুডিহ কোলিয়ারির ধোবি কুলহি এলাকায়।

উদ্ধারকারী দল তিনটি মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এবং সিআইএসএফ কর্মী উপস্থিত রয়েছে। ধানবাদের সার্কল অফিসার প্রশান্তকুমার লায়ক জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান চলছে এবং মৃতদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, গন্ডুডিহ কোলিয়ারি এলাকায় ভূগর্ভস্থ কাজ চলছে। সাম্প্রতিক কালে সেখানে অনেকগুলি ছোটখাটো ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ভারত কোকিং কোল লিমিটেড (বিসিসিএল)’ গন্ডুডিহ কোলিয়ারি এলাকা দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গন্ডুডিহ কোলিয়ারির যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, তার কাছেই একটি বেসরকারি সংস্থার কাজ চলছিল। সেখানেই রবিবার শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন ওই তিন মহিলা। স্থানীয়রা জানান, বিকট শব্দে ওই এলাকার বেশ কিছুটা জমি ধসে যায়। স্থানীয়রা ওই তিন মহিলাকে উদ্ধার করতে গেলেও কোনও লাভ হয়নি। মাটির তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তাঁদের।

ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে চলেছেন সাংসদরা। সংসদের বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিনেই বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে উঠে এসেছে, ‘৭৫ বছর’ আগে সংবিধান সভা থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে যে যাত্রা শুরু করেছিল ভারত, তার উত্থান-পতন, প্রাপ্তি, অভিজ্ঞতা, স্মৃতির কথা। মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশের ‘ঐতিহাসিক দিনের’ প্রাক্কালে ধানবাদের গন্ডুডিহ কোলিয়ারি এলাকায় তিন মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের ক্ষোভ বেড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমিধসের কারণে ওই তিন মহিলা মাটি চাপা পড়ার প্রায় এক ঘণ্টা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং বিসিসিএলের উদ্ধারকারী দল। বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের দিকে কর্তব্যে গাফিলতির আঙুলও তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, ভূমিধসপ্রবণ এলাকা থেকে মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি। আর সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা। আবার স্থানীয়দের একাংশের মতে, ওই এলাকার প্রতিটি বাড়িতে শৌচালয় না থাকার কারণেই ওই মহিলাদের এই পরিণতি হয়েছে। সুত্র। আনন্দবাজার পত্রিকা ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.