facebook sharing button
messenger sharing button
whatsapp sharing button
twitter sharing button
linkedin sharing button
print sharing button

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভিন্ন মডেল লক্ষ্য করা গেছে। সচরাচর এই মডেল চোখে পড়ে না। নৌকার ব্যজ পরে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন টেবিল ঘড়িতে। শুধু তাই নয়; তারা নিজেদের প্রার্থীর জয়ের জন্য ভোটকেন্দ্র ও এর আশেপাশে অবস্থান নিয়ে ছিলেন।

মূলত ধরপাকড় এড়াতে ও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীর আলম সমর্থকরা সরকার দলীয় প্রার্থীর ব্যাজ গলায় ধারন করেছেন। গাজীপুরের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এই দৃশ্য চোখে পড়েছে।

জায়েদা খাতুন সমর্থকরা বলেছেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই তাদের ওপর জুলুম নির্যাতন শুরু হয়। ভোটের সময় ঘনিয়ে আসার পর সেটি আরও বেড়ে যায়। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার পরেও জাহাঙ্গীর সমর্থক হওয়ায় অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। অনেকের বাড়িঘরে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। অনেকে দিনের পর দিন বাড়িছাড়া ছিলেন। এমতাবস্থায় ভোটকেন্দ্রে তারা মন না চাইলেও নৌকার ব্যাজ পরে ছিলেন।

ভোটের দিন বেশিরভাগ কেন্দ্রে জায়েদা খাতুনের কর্মীদের মাঠে পাওয়া যায়নি। নগরীর কোথাও জায়েদা খাতুনের পোস্টারও দেখা যায়নি।

এ নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটকেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের কেউ কেউ কেন্দ্রে গোপনকক্ষে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের বাধ্য করেন। আবার কোথাও তারা নিজেরাই গোপন কক্ষে গিয়েই ভোট দিয়ে আসেন।

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকজনকে আটক করেন। এর বাইরে কয়েকটি কেন্দ্র থেকে প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ নির্বাচনে সবকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিল। অনেক কেন্দ্রে লাঙ্গল ও হাতপাখা প্রতীকের এজেন্ট পাওয়া গেছে। দু-কয়েকটি ছাড়া কোনো কেন্দ্রেই জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট ছিলেন না।

বেশিরভাগ কেন্দ্রে জায়েদা খাতুনের এজেন্ট না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বৃহস্পতিবার সকালে আজমত উল্লা খান সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দিতে পারব না। যারা এজেন্ট দিতে পারেনি তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি বলতে পারি, ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট আসতে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি এজেন্ট দিতে না পারেন, তাহলে আমি তো সেই দায়িত্ব নেব না।

সালনা পোড়াবাড়ী সাবেরিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বাইরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নৌকা, লাঙ্গল ও হাতপাখা প্রতীকের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে প্রচার চালাতে দেখা গেছে। নৌকা প্রতীকের ক্যাম্পও ছিল সেখানে। আর ভোটকেন্দ্রের ভেতরেও নৌকার ব্যাজধারী সমর্থকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ওই কেন্দ্রের বাইরে কোথাও টেবিল ঘড়ি প্রতীকের ক্যাম্প ছিল না। এ প্রতীকের ব্যাজধারী কাউকে প্রচার চালাতেও দেখা যায়নি।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাবাড়ী ডিগ্রি কলেজে স্থাপিত দুটি ভোটকেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে নৌকা এবং লাঙ্গল ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট নেই। এ দুটি কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের কোনো লাইন না থাকলেও কলেজ মাঠে বিপুলসংখ্যক মানুষকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। তাদের অনেকেরই বুকে নৌকার ব্যাজ ছিল। তবে সেখানে ঘড়ি প্রতীকের ব্যাজ পরা কাউকে দেখা যায়নি।

সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ (কেন্দ্র-২) কেন্দ্র, সালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজসহ (কেন্দ্র-১) অন্তত ৫০টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা যুগান্তরের প্রতিবেদকদের জানান, তাদের কেন্দ্রে জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট আসেননি।
এই কেন্দ্রগুলোতে নেৌকার ব্যাজ পড়ে জায়েদা খাতুনের লোকজন ভোট পাহারা দিয়েছেন।

সুত্র, যুগান্তর ।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.