
পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যাপক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছে।
শুক্রবার রাজধানীর লালবাগে হৃদয় কমিউনিটি সেন্টারে থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে দলটির মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, বঙ্গবাজার পুড়ে গেছে-এই বাজার বড় লোকের বাজার নয়, সাধারণ মধ্যবিত্তদের বাজার। দুর্ভাগ্য আমাদের এর আগে সিদ্দিক বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন মানুষ মারা গেল…এর আগে চট্টগ্রামে হয়েছে। কিন্তু এই সরকারের এসব ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই।
তারা (সরকার) উদোরপিণ্ডি বুদোড় ঘাড়ে চাপাতে চায়। তারা নাকি এখন বলে যে, নাশকতার গন্ধ পায়। আওয়ামী লীগের অবস্থা হয়েছে যে, তারা সারাক্ষণ একটা দুঃস্বপ্ন দেখে। এই বলে বিএনপি আসলো, এই বলে আন্দোলন করলো, এই বলে তারেক রহমান আসলো। রাত্রি বেলা অনেক মানুষ খারাপ স্বপ্ন দেখলে আতকে উঠে না, চিৎকার করে না? আওয়ামী লীগও সারাক্ষণ দুঃস্বপ্ন দেখে এই বিএনপি এই বিএনপি আসলো।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের দেওয়ার কিছু না। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সমস্ত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়েছে। ভোট দিতে পারছেন না আপনারা জানেন ভোট আগের রাত্রে হয়ে গেছে, আর ওরা (আওয়ামী লীগ) সরকারে বসে গেছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভোটই হয়নি ১৫৩টি আসনে নির্বাচিত ঘোষণা হযে গেল। আর প্রত্যেক কথায় কথায় তারা খালি বলে উন্নয়নও করেছে। আমি এখানে আসার পথে দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা-উন্নয়ন কি চুবাইয়ে খাবো? উন্নয়নতো চিবাইয়ে খাওয়া যায় না। আমার পেটে যদি ভাত না থাকে, ১০টা উড়াল সেতু বানান আমার তাতে কি আসে যায়।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার কথা খুব সোজ কথা ১৪ বছর বহু জ্বালাইছেন এদেশের মানুষকে। এখন তোমাকে মানুষ দেখতে চায় না, আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না।সোজাসোজি বলতে চাই, এই রমজানের মাসে এই ইফতারে আগে যে, দয়া করে মানে মানে সরে পড়ো। আমাদের সব কিছুকে তোমরা ধবংস করে দিয়েছো, আমাদের অর্থনীতিকে ধবংস করেছো, আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধবংস করেছো, চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছো। দয়া করে সরে পড়েন, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। মানুষ একটা ভোট দিক, ভোট দিয়ে মানুষ যাকে খুশি তাকে নির্বাচন করুক।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনেক দুঃখের সঙ্গে বলেছেন যে, ইভিএম-ব্যালট কোনটাই কাজে দেবে না যদি বিরোধী দল অংশ নেয়, অর্থাৎ বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় সেটা কাজে দেবে না। কেউ মানবে না।
‘‘সুতরাং একটাই দাবি যে, পদত্যাগ করো আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করো।”
লালবাগের সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, লালবাগের মানুষ ঢাকার সবচেয়ে পুরনো মানুষ। আপনাদের এই এলাকায় অনেক নামকরা নেতা ছিলেন। সবশেষে আমাদের নাসিরউদ্দিন পিন্টু আমাদের একজন ত্যাগী, সাহসী, বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। এই সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে, জেলখানার মধ্যে হত্যা করেছে, কাস্টডিতে হত্যা করেছে, এরকম কাস্টডিতে বহু লোককে হত্যা করেছে, এই এলাকায় মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করে নিয়ে গেছে…।
এই জুলুমবাজ নির্যাতনকারী সরকারকে কেউ দেখতে চান না। আসুন, ইফতারের আগে আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া করবো তিনি যেন আমাদেরকে সেই শক্তি দেন, তৌফিক দেন যেন আমরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই অতি দানবকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।”
মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ ওয়ার্ড নেতারা বক্তব্য রাখেন।