
সরকারের পদত্যাগ ও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সরকারের উদ্যোগে সুষ্ঠু নির্বাচন করে রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষনেতারা। তারা বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছেন, তারা কেউ এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
আজ শনিবার বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, চাল, ডাল, তেল, কৃষি ও শিক্ষা উপকরণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠাসহ যুগপৎ আন্দোলনের ১৪ দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে রাজধানীর পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নেতারা এ কথা বলেন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নূর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহ-সভাপতি কে এম জাবির প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘১৪ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই সরকারের পদত্যাগ ও একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সরকারের উদ্যোগে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে সাংবিধান সংস্কার করে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের পথে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তাতে সবাইকে অংশ নিতে হবে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিশাল বহর নিয়ে জনগণের টাকায় দেশ বিদেশে ঘুরছেন তার ক্ষমতা টিকেয়ে রাখার জন্য ।কিন্তু তাতে মানুষের কি লাভ হয়েছে? সরকার যতই তালবাহানা করুক, শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছেন কেউ এই তার অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না। প্রধানমন্ত্রী অনেক সময় অনেক ওয়াদা করেছেন কিন্তু কখনোই কথা রাখেন না। তার কথায় আর কারও আস্থা নাই। উনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেই হবে।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সারাদেশের মানুষের কোথাও কোনো নিরাপত্তা নাই, দেশের মানুষকে গ্যাসচেম্বারে তুলে রেখেছে। এই সরকার সারাদেশের মানুষকে বন্ধক রেখে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। এদের পতন নিশ্চিত করতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ক্ষমতার সুষ্ঠু বণ্টন নাই। গণতন্ত্র মঞ্চ স্পষ্ট করেছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কার কাছে কতটা থাকবে, কীভাবে বণ্টন হবে তার কাঠামো ঠিক করতে হবে। রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার না করলে আমাদর সংকটের সমাধান হবে না।’
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নূর বলেন, ‘বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে, এবং পাচার করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমন পর্যায়ে গেছে সাধারণ মানুষের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে গেছে। বিরোধীদলের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যাহত করার জন্য সরকার সারাদেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি তৈরি করছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়ছার, জেএসডির সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কামাল পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন মন্টু, গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক প্রমুখ।