
ষাটোর্ধ্ব মো. শামসুল আলম। প্রতিদিনকার মতো বাড়ির কাছের চা দোকানে গিয়েছেন চা খেতে আর পত্রিকা পড়তে। এক হাতে খবরের কাগজ, অন্যহাতে চা। কে জানতো এই যাওয়া যে শামসুলের শেষ যাওয়া হবে! আর ফেরা হবে না বাড়ি।
সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণের পর উড়ে আসা লোহার টুকরোর আঘাতে মারা গেছেন ৬৫ বছর বয়সী শামসুল আলম। অক্সিজেন প্ল্যান্টের থেকে এক কিলোমিটার দূরে বসেও জীবন হারাতে হলো তাকে।
জানা যায়, নিহত মো. শামসুল আলম একসময় পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে দীর্ঘদিন তিনি অবসর জীবনযাপন করছিলেন। অবসর জীবনে নিয়ম করে প্রতিদিন যেতেন কদমরসুলপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে। চা খেতে খেতে পড়তেন খবরের কাগজ।
নিহত শামসুল ইসলামের স্ত্রীর ছোট ভাই আলাউদ্দিন বলেন, ‘ দুলাভাই আমার দোকানে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের লোহার টুকরো দোকানের ছাদ ভেঙে উনার মাথায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন তিনি। এখন লাশের অপেক্ষায় আছি।’
শামসুল ইসলামের বড় ভাই মাওলানা ওবায়দুল মোস্তফা কদম রসুলী বলেন, আমার ভাই টুকিটাকি ব্যবসা-বাণিজ্য করত। একটা ছেলে পড়ালেখা করছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তাকে হারিয়ে পরিবার এখন নিঃস্ব।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৬ জন এবং আহত ২৪ জন। নিহতদের মধ্যে পরিচয় মিলেছে ৫ জনের। তাদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং বাকি চারজন সীতাকুণ্ডের বিএসবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে, বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে পুলিশের ধারণা, অক্সিজেনের প্ল্যান্ট থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।