একটি জনসভাকে কেন্দ্র করে এত উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আগে কখনও হয়েছে কি না জানিনা , বিএনপির ঢাকার জনসভা ছিল তাদের ধারাবাহিক জনসভাগুলোর শেষ জনসভা , সেখান থেকে তারা পরবর্তী কর্মসূচীর ঘোষণা করবে বলে গণমাধ্যমকে তারা জানিয়েছিল , তারা চেয়েছিল তাদের নয়াপল্টনের অফিস চত্বরে সেই সভা করতে , কিন্তু পুলিশ তাদের সেখানে বাধা দিয়ে তুঘলকি কাণ্ড বাধিয়ে ফেলল, তাদের অফিসে তাদের কোন প্রতিনিধি ছাড়াই অভিযান শুরু করল , গ্রেফতার করল মহাসচিব সহ শীর্ষ নেতাদের , এই গ্রেফতার এবং জনসভা করতে না দেয়ার খবর পৌঁছে গেল আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়। বাধাবিপত্তি এড়িয়ে তাদের গোলাপবাগের মাঠের জনসভার খবরও পৌঁছে গেছে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ ইউরোপ – আমেরিকার মিডিয়াতে , জনসভাকে কেন্দ্র করে ঘটনাবলীর আমেরিকার হোয়াইট হাউস থেকে শুরু স্টেট ডিপার্টমেণ্ট এবং জাতিসংঘের মুখপাত্রও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এই বিষয়ে। সরকার এবং পুলিশ এই জনসভায় বাধা না দিলে জনসভার সংবাদ বাংলাদেশের মিডিয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকতো , বিএনপির সাম্প্রতিক উত্থানের খবর বিশ্ববাসী জানতে পারতোনা । আগের বিভাগীয় সমাবেশেও পরিবহণ ধর্মঘট ডেকে বাধা দেওয়ার ফলে একদিনের জনসভা ৩ দিনের সমাবেশে রূপান্তরিত হয়েছে মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রচার পেয়েছে ।
ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস, বার্তা সংস্থা এএফপি, স্ট্রেইটস টাইমস, এনডিটিভি প্রভৃতি। হিন্দুস্তান টাইমসের শিরোনাম- ‘‘বাংলাদেশ অপোজিশন মাউন্টস হিউজ প্রটেস্ট ইন ঢাকা: ‘শেখ হাসিনা ভোট থিফ’। এনডিটিভির শিরোনাম- ‘ম্যাসিভ প্রটেস্ট ইন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল এগেইনস্ট শেখ হাসিনা’জ গভর্নমেন্ট’। এএফপি’র শিরোনাম- ‘বাংলাদেশ অপোজিশন মাউন্টস হিউজ প্রটেস্ট ইন ক্যাপিটাল’। হিন্দুস্তান টাইমস তার প্রতিবেদনে লিখেছে, নতুন নির্বাচন দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় সমবেত হন। শনিবার রাজধানী ঢাকায় উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীরা আগের নির্বাচনে ‘ভোট চুরি’ নিয়ে স্লোগান দেন। সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগে বিরোধী দলের শীর্ষ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আসলে এটা মনে হয় সরকারী দল উপলদ্ধি করতে পারেনি বা তাদের আন্দাজের বাইরে ছিল যে বাধা বিএনপির নেতাকর্মীরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে পারে । যাই হোক একটি গণতান্ত্রিক দেশে বাধাহীনভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে দেয়া উচিৎ , ভয়ভীতি নয় কাজ দিয়ে জনগনের মন জয় করা গণতান্ত্রিক রীতি । রাজনীতিতে হঠকারিতা সবসময় নেগেটিভ ফল আসে , এই জনসভা গতকাল হয়ে গেছে , এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন সহিংসতার খবর আসেনি , জনসভা থেকেই আগত নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যেতে , তারা গেছেও সেভাবে । আসলে এটাই হওয়া উচিৎ , সহিংসতা না করেলে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জগনের সম্পৃক্ততা বাড়বে , এটা সব রাজনৈতিক দলের জন্যই প্রযোজ্য ।
আমরা আশা করবো আগামীতে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচীকে বাধা না দিয়ে যেন গনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী করতে দেয়া হয় , এবং রাজনীতিকে রাজনিতি দিয়েই মোকাবিলা করা হয় , শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নয় ।
হাবিব বাবুল , প্রধান সম্পাদক / শুদ্ধস্বর ডটকম ।