আর হাতে গোনা কয়েক দিন। ২০ নভেম্বর থেকে শুরু ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রায় ১২ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী কাতারে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কাতারের কঠোর আইন কানুন মেনে চলতে হবে তাঁদের। মধ্য প্রাচ্যের দেশটির কিছু আদব কায়দাও জেনে রাখা জরুরি।

বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের দায়িত্ব কাতার পাওয়ার পর থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে নানা রকম আশঙ্কা উঁকি দিতে শুরু করে। আশঙ্কার কারণ রক্ষণশীল কাতারের কঠোর আইন। ভয় কাটাতে বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই নরম মনোভাব নেওয়ার কথা জানিয়েছে কাতারের প্রশাসন। ফুটবলপ্রেমীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, নিশ্চিত করার কথা বলেছেন বিশ্বকাপের আয়োজকরাও। তবু, কাতারে পৌঁছানোর পর কিছুটা সতর্ক থাকাই ভাল।

কথায় বলে, সাবধানের মার নেই। এই আপ্তবাক্যটি মনে রাখলেই ফুটবলপ্রেমীরা ভাল বিশ্বকাপ দেখতে পারবেন। সেখানকার সমাজ জীবনের কিছু আদব কায়দা না জানা থাকলে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে।

প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়িয়ে করমর্দন করাই ভাল। বিশেষ করে বয়সে বড় কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়ানো একরকম বাধ্যতামূলক। কোনও মহিলার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় নিজে থেকে করমর্দনের জন্য হাত না বাড়ানোই ভাল। বরং সেই মহিলার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। তিনি করমর্দনের জন্য আগ্রহ দেখালেই শুধু হাত বাড়ানো যেতে পারে। কারণ কাতারের অধিকাংশ মহিলাই অন্য পুরুষের স্পর্শ এড়িয়ে চলেন। সুতরাং আগবাড়িয়ে হাত না বাড়ানোই ভাল। নিরাপদ থাকতে ডান হাত নিজের হৃৎপিণ্ডের উপর রাখতে পারেন। কাতারের সমাজে এ ভাবেও সৌজন্য বিনিময়ের রীতি রয়েছে।

বান্ধবী বা স্ত্রীকে নিয়ে বিশ্বকাপ দেখতে গেলে রাস্তায় তাঁর হাত ধরে হাঁটতে পারেন। প্রকাশ্যে জড়িয়ে না ধরাই ভাল। প্রিয় দলের জয়ের আনন্দে তাঁকে কিন্তু চুম্বন করে ফেলবেন না। তা হলেই বিপদ। প্রকাশ্যে চুম্বন এই দেশে অপরাধ।

ইংরাজিতে আপনি চোস্ত হতেই পারেন। কিন্ত সব জায়গায় ইংরেজদের ভাষা ব্যবহার করলে হবে না। কারণ কাতারের অধিকাংশ মানুষই ইংরাজিতে সাবলীল নয়। কাতারে পৌঁছে প্রয়োজনীয় কিছু স্থানীয় শব্দ শিখে নিলে সুবিধা হবে।

ভাগ্য ভাল থাকলে কাতারের কোনও নাগরিকের আমন্ত্রণ পেতে পারেন। তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েও কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। প্রথমত, জুতো পরে তাঁর বাড়িতে ঢুকবেন না। এতে গৃহকর্তা অপমানিত বোধ করতে পারেন। বাইরে জুতো খুলে বাড়ির ভিতরে যাবেন। কখনই পায়ের উপর পা তুলে বসবেন না। তা হলে আপনার সম্পর্কে খারাপ মনোভাব তৈরি হবে পরিবারের সদস্যদের।

কাতারের মানুষরা সাধারণত একটি বড় পাত্র থেকেই ভাগ করে খাবার খান। পাত্রের চারদিকে সকলে এক সঙ্গে বসেন। সেখান থেকে নিয়েই এক সঙ্গে খান। অতিথিকেও তাঁরা এ ভাবেই আপ্যায়ন করেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক পাত্র থেকেই খান অতিথিরাও।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.