
অ্যাডভোকেট আনসার খান
সিলেটে অনুষ্ঠিত একটা রাজনৈতিক মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নিয়েছিলাম অতি সম্প্রতি। সিলেটের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ও বক্তব্যের মাধ্যমে মতবিনিময় সভা অত্যন্ত প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিলো। আলোচকরা দেশের চলমান রাজনীতির নানাবিধ প্রসঙ্গ নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। আলোচকগণের বক্তব্যে রাজনৈতিক অনেক বিষয়ে ভিন্নমত প্রতিফলিত হয়েছে এবং ভিন্ন মতামত থাকাটাই স্বাভাবিক।
মতবিনিময়ের জন্য অনুষ্ঠিত এ-সভায় আলোচকদের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে মতভিন্নতা দেখা গেলেও একটা বিষয়ে সাধারণ একটা ঐকমত্য লক্ষ্য করা গেছে। সব আলোচকই বলেছেন দেশে রাজনৈতিক সংকট বিদ্যমান আছে এবং সংকট থেকে বের হয়ে আসার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করে দেশের সংবিধান সংশোধন করে ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে একটা গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
সংবিধান একটা দেশের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশেও সংবিধানকে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং দেশের সংবিধানের আলোকেই রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালিত হয়ে আসছে বলে দাবি করা হয়। তবে এ-ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। কেননা, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, নাগরিক সমাজের অনেকে মনে করেন বিগত সময়গুলোতে দেশের সংবিধানে যেভাবে কাঁটাছেঁড়া করা হয়েছে তাতে আদি সংবিধানের মৌলিক চরিত্র,-উদারনৈতিক গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদি মূল স্তম্ভগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। কাজেই কাঁটাছেঁড়া করা সংবিধানের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্র ও সরকার কখনো জনগণের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়নের জন্য উপযোগী হতে পারে না। অর্থাৎ বর্তমানে বিদ্যমান দেশের সংবিধানের উপযোগিতা নিয়ে জনগণের মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে, এটাই বাস্তবতা।
দেশ শাসনের মৌলিক ভিত্তি দেশের সংবিধান নিয়ে যদি বড়ধরণের মতপার্থক্য থাকে এবং এর ফলে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি এবং শাসনে ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় স্থায়ী সংকট সৃষ্টি হবেই এবং প্রকৃতঅর্থে দেশের শাসনে ও রাজনীতিতে একটা সংকট তৈরি হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে, যার প্রভাব পড়েছে দেশের সর্বক্ষেত্রে এবং এমনকি গোটা জাতিও রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক বিতর্কে বিভক্ত হয়ে আছে। জাতীয় এই সংকট নিয়ে উদ্ধিগ্ন জনগণ এবং সংকট থেকে বের হওয়ার বিষয়টা মাথায় রেখেই দেশের সংবিধান সংশোধনের অপরিহার্যতা নিয়ে কথা বলেছেন আলোচকরা। সাংবিধানিক ত্রুটিগুলো কী এবং তার সংশোধন কেন অপরিহার্য বলে মনে করা হয় তা আলোচনার জন্য দেশের সংবিধানের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে হয়।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত স্টেকহোল্ডারদের অনেকেই মনে করেন সংবিধানে বিভিন্ন সময়ে সংশোধনী আনয়ন করে শাসকদের স্বার্থে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক শাসনের মূল চেতনা ও উপাদানগুলো রহিত করে অনেক অগণতান্ত্রিক উপাদানগুলোর সন্নিবেশ করা হয়েছে বর্তমানের বিদ্যমান সংবিধানে। উদাহরণ হিসেবে সংবিধানের দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম, ত্রয়োদশ, পঞ্চদশ সংশোধনী সহ অন্যান্য সংশোধনীর দিকে দৃষ্টি দিলেই দেখা যাবে যে, দেশের জনগণের স্বার্থের বিষয়টা বিবেচনায় না রেখেই, কেবলমাত্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, শাসকগোষ্ঠী, তাদের সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক স্বার্থে বেশিরভাগ সংশোধনী আনয়ন করা হয়েছিলো এবং এটা অপ্রিয় হলেও সত্য যে, শাসক ও তাদের কায়েমী স্বার্থবাদীদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য সংবিধান সংশোধন করে অনেক ক্ষেত্রে জনগণের মৌলিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীন অধিকার, ভোট ও ভাতের অধিকার এবং এমনকি মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে সংকুচিত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় প্রতিটা সংশোধনীই শাসকদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে, পক্ষান্তরে জনগণের ক্ষমতা সংকুচিত হয়েছে ব্যাপকভাবে।
মাত্র পঞ্চাশ বছরে সংবিধানে সতেরোটা সংশোধনী আনয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সংশোধনী জনগণের মৌলিক অধিকার হরণের একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চতুর্থ সংশোধনীর দ্বারা দেশের শাসন ব্যবস্থাকে আমুল পরিবর্তন করা হয়েছিলো। অন্যান্য কয়েকটা সংশোধনী আনয়নের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে গৃহীত মূল সংবিধান কাটাছেঁড়া করে এমন-সব অনুচ্ছেদ, ধারা-উপধারা সংযোজন করা হয়েছে যা মূল সংবিধানের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক শাসনের চেতনাকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়ে এর স্থলে অগণতান্ত্রিক উপাদানগুলো সন্নিবেশ করে দেশের সকল মৌলিক কাঠামোর, অর্থাৎ শাসন বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এবং স্বাধীন ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মূল স্তম্ভ নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা খর্ব করে সকল ক্ষমতা শাসন বিভাগের ওপর ন্যস্ত করে দেশ পরিচালনায় এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব স্থাপনের জন্য সাংবিধানিক একনায়কত্ব বা কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠার সূযোগ অবারিত করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষকরে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়ার কারণে সরকার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ব্যবস্থা নিয়ে দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে চরম মতানৈক্য ও মতান্তর দেখা দিয়েছে। এতে করে রাষ্ট্রক্ষমতায় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এসবের যোগফল হলো দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক সংকট।
রাজনৈতিক এই সংকট উত্তরণের জন্য এবং সংবিধানে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার বন্টন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনয়ন করা, আইন ও বিচার বিভাগের ওপর শাসন বিভাগের বিদ্যমান ক্ষমতার পূনর্বিন্যাস এবং নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার জন্য কমিশন নিয়োগের বিষয়টায় ঐকমত্য সৃষ্টি করার জন্য সংবিধানে বিধান সংযোজন করা এবং কমিশন সচিবালয়ের সচিব সহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, শাস্তির বিধান ও বেতন-ভাতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা, অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন ও তার সচিবালয়কে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করা ইত্যাদি মৌলিক বিষয়ে সাধারণ ঐকমত্য সৃষ্টি করে সংবিধানে সংশোধন আনয়ন করা অপরিহার্য বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে অনেক রাজনৈতিক ভাষ্যকার, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো এবং সচেতন জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই দেশের সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক বিধান, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য দেশে আবারও সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে কথা বলতে শুরু করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলো আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে রাজপথের রাজনীতিকে উত্তপ্ত করে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে এবং ক্ষমতাসীনরা তাচ্ছিল্যের সাথে বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। এর থেকে একটা বিষয় ক্রমেই স্পষ্ট হতে চলেছে যে, দেশের রাজনৈতিক সংকট জটিল থেকে জটিলতার দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ রক্তাক্ত হতে পারে দেশের মাটি। এতে দেশে চরম অস্থিরতা দেখা দিতে পারে, যা জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে তোলবে।
দেশে চলমান জটিল রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির মূলে রয়েছে সরকার পরিবর্তনের জন্য গ্রহণযোগ্য একটা সুষ্ঠু স্বাভাবিক পদ্ধতির অভাব। সঠিক একটা পদ্ধতি না থাকার কারণে দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সূযোগ অত্যন্ত সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারসাধারণ তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দল বা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন, -এমনটা এখন জনগণের নিকট অবিশ্বাস্য ব্যাপার বলে মনে হতে শুরু করেছে বিধায় কোনো ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েই মানুষের মধ্যে কোনোও আগ্রহ নেই বিধায় বিগত দিনগুলোতে হয়ে যাওয়া স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনেই ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যায়নি। ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে তাতে জল ঢেলেছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার উপনির্বাচন। এই উপনির্বাচন নিয়ে ভয়ানক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন এবং এমনকি গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাই। এই নির্বাচনে সরকার সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর সমর্থনে এমনই নগ্ন হস্তক্ষেপ ও কারচুপির আশ্রয় গ্রহণ করেছিলো যে শেষ পর্যন্ত পুরো নির্বাচনই বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছিলো নির্বাচন কমিশন। খোদ্ নির্বাচন কমিশনই বলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন কোনো সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা প্রায় অসম্ভব। তাই বিরোধীরাও বলার সুযোগ পেয়ে গেছে যে ক্ষমতাসীন কোনো সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় এবং ফলে ভোট প্রদানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলেই ভোটারদের মধ্যে একটা পূর্ব ধারণা তৈরি হয়েছে। জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া এই ধারণা থেকে বের করে নিয়ে এসে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব ছিলো বিদ্যমান সরকারের। কিন্তু সরকার ও তার প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন সেই বিশ্বাসযোগ্য ক্ষেত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়নি বলেই একটা বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান ও পরিচালনার জন্য আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং এই দাবির পক্ষে ক্রমেই জনমত তৈরি হতে চলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশের জনগণের অভিজ্ঞতা ইতোপূর্বে সৃষ্টি হয়েছে এবং এ-কারণে এই সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে ইতিবাচক ও নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটা বাতিল না করে বরং এর ত্রুটিগুলো সংশোধন করে এটা জনগণের নিকট আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলে নির্বাচন ব্যবস্থাকে জনগণের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলা প্রয়োজন ছিলো বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। যেহেতু এখন আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি সামনে চলে এসেছে, সেহেতু সকল স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য সাংবিধানিক ক্ষমতা সম্পন্ন একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জনগণের ইচ্ছার অভিব্যক্তি স্বরূপ সকল স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হলে বর্তমানে বিদ্যমান পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল উত্থাপন ও পাস করে নেওয়া সম্ভব।
সরকার নির্বাচন এবং সরকারের পরিবর্তন সংক্রান্ত সকল ক্ষমতা জনগণের, -এ সত্যটা প্রতিষ্ঠা ও নিশ্চিত করার জন্য জনগণের স্বাধীন ও ভয়হীন পরিবেশে ভোট প্রদানের অবাধ অধিকার ও সুযোগের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা বা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পদ্ধতি গড়ে তোলা রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং এর জন্য নতুন কোনো পদ্ধতি গড়ে তোলার পূর্ব পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা আবশ্যিক অর্থেই জরুরি। কারণ, জনগণের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়েছে যে ক্ষমতায় থাকা কোনো দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য এবং কারচুপিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা একেবারেই অসম্ভব। আর বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে দেশের রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধানের কোনো পথ খোলা নেই।
লেখক : অ্যাডভোকেট আনসার খান
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ।