শিলিগুড়ির ইচ্ছেবাড়িতে কলকাতার ছায়ানটের অনুষ্ঠান

গত ২১ আগস্ট শিলিগুড়ির ইচ্ছেবাড়িতে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘বিদ্রোহী’ কবিতা- প্রকাশের শতবর্ষে, কলকাতার ছায়ানট ও শিলিগুড়ির অর্চক যৌথভাবে আয়োজন করে ‘চির-উন্নত মম শির!’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি। সমগ্র অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সোমঋতা মল্লিক। ৩/৪-সি, তালতলা লেন- কলকাতায় এই বাড়িটিতে বসেই কাজী নজরুল ইসলাম সৃষ্টি করেছিলেন তাঁর কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’।
‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি রচিত হয় ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে। মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথায়’ নিজেকে এই কবিতার প্রথম শ্রোতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি ‘বিজলী’তেই প্রথম ছাপা হয়েছিল ‘বিদ্রোহী’। ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কেবল অসাধারণ জনপ্রিয়তা পায়নি, একই কবিতা একাধিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের দুর্লভ সৌভাগ্য অর্জন করেছিল। শুধুমাত্র তৎকালীন সময়েই নয়, শতবর্ষে দাঁড়িয়েও এই কবিতা সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং জনপ্রিয়। বহু গুণীজন এই কবিতা সম্পর্কে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
অনুষ্ঠান শুরু হয় ছায়ানটের শিল্পীদের কণ্ঠে নজরুলের দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। অংশগ্রহণ করেন সুরূপা মল্লিক, রীণা রায় এবং সোমঋতা মল্লিক। বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করেন পার্থ চৌধুরী। মোমের পুতুল গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে অর্চকের শিল্পীরা। পরিচালনায় অদিতি দাস ঘোষ। একক সংগীতে কোচবিহার থেকে অংশগ্রহণ করেন সন্তোষ মজুমদার। একক নৃত্য পরিবেশনায় অনিশা চক্রবর্তী। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন অর্চকের শিল্পীরী। নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন শিলিগুড়ির অভিমান রায় এবং তার সম্প্রদায়। ছায়ানটের শিশু শিল্পী অরণ্য স্পন্দন ভদ্রের কণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠান শেষ হয় ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতা মল্লিকের কণ্ঠে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিশ্বজিৎ রায়। অনুষ্ঠানে যন্ত্র সহযোগিতায় ছিলেন কিবোর্ডে অনির্বাণ দাস, তবলায় রানা সরকার, গিটারে শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়। কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই ছায়ানটের এই বিশেষ উদ্যোগ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.