
সিলেটের ভয়াবহ বন্যায় নায়ক সিয়ামের আর্জি
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সিলেটবাসী। শহরের ২০টি এলাকাসহ প্লাবিত হয়েছে পাঁচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। একইসঙ্গে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগের শেষ ভরসাস্থল জগন্নাথপুর ফেরি চলাচল বন্ধ। এতে সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সেখানকার একতলা কোনো ঘর বসবাসের উপযোগী নেই। হঠাৎ ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের স্মৃতি ভীষণ পীড়া দিচ্ছে নায়ক সিয়ামকে।
স্মৃতিচারণ করে সিয়াম জানিয়েছেন, ‘আমার এখনও মনে আছে টাঙ্গুয়ার হাওরের সে জলরাশি, সে ট্রলারের কথা। বন্ধুদের নিয়ে গিয়েছিলাম হাওর দেখতে। সুনামগঞ্জের মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসা মুগ্ধ করেছিল যেন হাওরের চেয়েও বেশি। সে সুনামগঞ্জ আজ কাঁদছে। বন্যায় ডুবে গেছে সুনামগঞ্জের ৯০% ঘরবাড়ি। আমরা সুউচ্চ দালানে বসে ওয়েদার ডিমান্ড, ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে যখন লিখছি তখন সুনামগঞ্জ, সিলেটের মানুষ লড়াই করছেন বন্যার সাথে।’
বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে নায়কের আহ্বান, ‘সবাই মিলে চলুন এখনই পাশে দাঁড়াই, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই সুনামগঞ্জ ও সিলেটবাসীর জন্য। সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করার। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে যেন একটি প্রাণও না হারায়। জলের স্রোতে না ভেসে যাক একটি স্বপ্নও।’
জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি ছাতকে বিপদসীমার ২শ’ ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা শহরের অর্ধেকের বেশি এলাকা পানিতে ডুবে আছে। কোম্পানীগঞ্জ, লামাকাজী, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, ওসমানীনগরসহ সবকটি এলাকা এখন পানির তলায়। বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে এসব অঞ্চলের মানুষের কারও বাড়িতে হাঁটুপানি, কারও কোমর সমান, আবার কারও বাড়িতে গলাসমান পানি। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। অনেকেই আবার মাচা বানিয়ে কিংবা ঘরের চালে আশ্রয় নিয়েছেন। অধিকাংশ ঘরেই রান্না বন্ধ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। তাই খাবার ও বিশুদ্ধ পানি চেয়ে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন অনেকেই।
এছাড়াও বেশ কিছু বিদ্যুৎ স্টেশন ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও সবধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি পানি চলে আসায় শুক্রবার (১৭ জুন) বিকেল থেকে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।