সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গতকাল শনিবার বিস্ফোরণে মোমিনুল হক (২৫) নামের এক যুবক মারা গেছেন।

মৃত্যুর আগে বাবাকে ফোন করে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার এক পা উড়ে গেছে। আমি কালেমা পড়েছি। হয়তো আর বাঁচবো না। আমাকে ক্ষমা করে দিও।’

গতকাল শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বসে ছেলের সঙ্গে বলা শেষ কথাগুলো এভাবেই জানান তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ফরিদুল আলম চৌধুরী।

হাউমাউ করে কেঁদে তিনি বলেন, ‘রাতে একবার আমাকে ফোন দিয়েছিল মোমিনুল। তখন বলেছিল, বাবা আমাদের কনটেইনার ডিপোতে আগুন লেগেছে। কেমিক্যালের ট্যাংক সব জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। তখন আমি বললাম, তুমি সতর্ক থাকো। ফোন কেটে যাওয়ার পর পুনরায় কল দিলে আর ধরেনি। ’

‘কিছুক্ষণ পর ছেলে ফোন করে বলে, ‘আমার এক পা উড়ে গেছে বাবা। আমি কালেমা পড়েছি। হয়তো আর বাঁচবো না। আমাকে ক্ষমা করে দিও। এ কথা বলেই ফোন রেখে দেয়,’ বলেন ফরিদুল আলম চৌধুরী।

তিনি আরও বলেন, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। মোমিনুল ছোট। বিএম কনটেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিল। তিন মাস আগে জীবনের প্রথম চাকরিতে যোগদান করেছিল। ছেলেকে হারিয়ে আমার সব শেষ হয়ে গেলো।

তার সঙ্গে থাকা মুমিনুলের চাচাত ভাই তৈয়ব বলেন, ‘আমাদের পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল মুমিনুলকে নিয়ে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’

চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করে এমবিএ করছিলেন মমিনুল হক। তিন মাস আগে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে যোগ দেন তিনি। তার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার চনুয়া ইউনিয়নে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দগ্ধ ৬০-৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading