
বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সর্ম্পক করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। তবে যারা বাংলাদেশের ক্ষতি করবে এবং দেশের সম্পদ ব্যবহার করে নিজেদের আক্রমণাত্মক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না বাংলাদেশ। এভাবেই বাংলাদেশের সার্বভৌম স্বার্থকে রক্ষা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) ‘চেঞ্জিং গ্লোবাল অর্ডার: সিকিউরিং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের অগ্রগতি, করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের জীবনযাত্রায় বাধাগ্রস্ত করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলো কখনই কমবে না। ভবিষ্যৎ যে চ্যালেঞ্জগুলো আসছে তা মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আজ আমাদের এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে তা মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত।’
শক্তিধর দেশগুলো প্রতিনিয়ত নতুন ফোরাম নিয়ে আসছে জানিয়ে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘অনেক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদার ফোরাম তৈরি হচ্ছে। আমরা বেল্ট ও রোড উদ্যোগ দেখেছি, আমরা কোয়াড দেখেছি, অ্যাপেক দেখেছি। আর সম্প্রতি আমরা ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক দেখেছি।’
কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দেশের উন্নয়নসহ মৌলিক জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বৈশ্বিক এ পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখে রপ্তানি নির্ভর বাজার ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন প্রবহমান রাখার বিষয়গুলোর ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি।’
মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বব্যবস্থার এসব অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ তার “সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি শত্রুতা নয়” এই কূটনীতির মূলনীতি অবলম্বন করে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও অন্যের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি বজায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক লালন করছে। যদিও বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি বজায় রাখছে, বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির কৌশলগত সামঞ্জস্য বিধান করা প্রয়োজন।’
সেমিনারে ওয়ার্কিং সেশনে পরিবর্তিত পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার দৃষ্টিকোণ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রাশেদুজ্জামান, বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাংলাদেশের জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে বিআইআইএসএসের গবেষক রাজিয়া সুলতানা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির ওপর বিআইআইএসএসের গবেষক এএসএম তারেক হাসান শিমুল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।