
,দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে প্রতিবাদ নাগরিক যুব ঐক্যের প্রতিবাদ সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ দেশের এক গভীর সঙ্কটের সময় নাগরিক যুব ঐক্যের নবনির্বাচিত কমিটির আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশি দেশগুলোর সাংবাদিক বুদ্ধিজীবিগন যারা আমাদের কল্যাণ চায়, মঙ্গল চায় তারাও আজ আমাদের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। এই মুহূর্তে ইউএসএ ডয়ারের সরকারি হিসেবে দাম ৮৬ টাকার বেশি, বাইরে তো ১০২ টাকা। কদিন আগেই শুনলাম রেকর্ড রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে, অথচ এখন শুনছি আগামী ৫ মাস পরে আর আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডয়ারও হাতে নেউ। অর্থাৎ দেশকে দেওলিয়া বানিয়ে ফেলেছেন আপনারা। প্রতি বছর সরকারি হিসাব অনুযায়ী বিদেশে অর্থ পাচার হয় ৭০ হাজার কোটি টাকা। আরও লক্ষ কোটি টাকা হুন্ডি এবং অন্যান্য মাধ্যমে পাচার হয়। এই টাকা জনগণের। সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশের পুলিশ-র ্যাবের গায়ে ডাকাতির লেবেল লেগে গেছে। সরকার তাদেরকে দিয়ে চুরি-ডাকাতি করাতে চায়। ১০ টাকার আমদানি করে ১৬ টাকার হিসাব দিয়ে পাচার করে ৬ টাকা। আর সরকার মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য শুধু জিডিপি, মাথাপিছু আয়, আর উন্নয়নের কথা বলে। দেশে মানুষ গরিব হচ্ছে, যারা দুই বেলা খেতে পারতো, এখন একবেলা খায় তাদের কথা বলে না। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করার কথা বলছেন, মানে হাতে ডলার নেই, আপনার মন্ত্রিরা কতোবার বিদেশ যান, কতো ডলার নিয়ে যান, কতো পাচার করেন, তার হিসাব আমাদের দিতে হবে। সরকার নিজেই তো চুরি করে। দেশ দেওলিয়া হতে বসেছে বললে প্রধানমন্ত্রী রাগ করেন, ধমক দেন, থামিয়ে দেন, কিন্তু আমাদের রিজার্ভ কমে গেছে, মানুষের পকেটে টাকা নাই, ক্ষুধার আগুন নিয়ে মানুষ ঘুমোতে যায়। ঘরে ঘরে চাকুরি আর ১০ টাকায় চালের কথা বলেছিলেন, আজ মোটা চালের দামও ৫০ টাকা, ১ কোটি শিক্ষিত যুবক বেকার, কাজ-খাবার দুটিই দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এরা সফল হয়েছে শুধু টাকা-সম্পদ লুটপাট করে নিজেদের আখের গোছাতে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশের মানুষের হাহাকার।
অভাবি, নির্যাতিত মানুষ আজ জিজ্ঞাসা করে,এই সরকার যাবে কবে? পদ্মা সেতু উদ্বোধন কবে হবে? এতে কতো টাকা খরচ হবে? এতে কতো হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন- এসবের হিসাব দেন। দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে এই পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দিতে চান। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম আজ দৈনিক পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তার সম্পর্কেও অসত্য কথা বলে পদ্মা সেতু না-হওয়ার দায় দিয়েছেন। কতোটা নির্লজ্জ হলে মানুষ এমনসব কথা বলতে পারেন। মানুষ লজ্জা পায়, প্রধানমন্ত্রীর, আওয়ামীলীগ এর নেতৃবৃন্দের কোনো লজ্জা নাই। এরা ভোটচোর, ডাকাত, লুটপাটকারী, পাচারকারী, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মন ওদের নেই। এখন এই দেশের সকল মানুষের একটাই চাওয়া, ‘তুমি দেশ চালাতে ব্যর্থ, তুমি যাও।’ শ্রীলংকায় যা হয়েছে, আমরা আপনাদের তেমনটি দেখতে চাই না। আপনার মন্ত্রিএমপিরা আন্ডারওয়ার পরেও কোথাও দৌড়ে গিয়ে পালাতে পারবে বলে মনে হয় না। অতএব গদি ছাড়েন। এই সরকার চলে গেলে কোন সরকার আসবে তা আমরা ভাববো, অতীতেও অনেক সরকার গেছে, অনেক সরকার বসেছে, সেটি নিয়ে আপনাদের ভাবতে হবে না। এলটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে, তারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করে যাবে। জনগণকে নিয়ে এই আন্দোলনে আমরাই জয়ী হবো, একটি সাম্যের, সত্যের, সুন্দর সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবোই। যুব ঐক্যের সাবেক সমন্বয়ক এস এম এ কবীর হাসান বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু ৫০ হাজার কোটি টাকায় করে চুরিলুটপাটের যে মহাসমারোহ হয়েছে তাতে আওয়ামীলীগ বা শেখ হাসিনার কোনো কৃতিত্ব নাই, এই চুরির বিচার একদিন হবেই। এই সরকারের আমলে যে চুরি-পাচার হয়েছে তা দিয়ে ৩টি পদ্মাসেতু আর সারাদেশের মানুষের জন্য প্রকৃত উন্নয়ন করা সম্ভব হতো। নাগরিক যুব ঐক্যের সভাপতি মো: ইকবাল হোসাইন (সাম্য শাহ) তার বক্তব্যে বলেন, যখন আমরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের এই চত্তরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমবেত হয়েছি ঠিক তখন না খেয়ে আছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া অগণিত সাধারণ মানুষ; পুরো বাংলাদেশ। বন্ধুরা, লুটপাটের সরকার তার ক্ষমতা ব্যবহার করে বিগত সময়ে দেশের লক্ষ-কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। নামে-বেনামে ব্যংক লুট করেছে এখন সেই প্রভাব আমরা আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে দেখতে পাচ্ছি। খেসারত দিচ্ছি। সরকার যতো কথাই বলুক, বর্তমান বাজার ব্যবস্থা এখন আর সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাই।
এটাই কথা, এটাই সত্য! নাগরিক যুব ঐক্যের সাধারণ সভাপতি মো: ইকবাল হোসাইন (সাম্য শাহ) এর সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক মো: জহির হোসেনের সঞ্চালনায় নাগরিক যুব ঐক্যের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য ও যুব ঐক্যের সাবেক সমন্বয়ক এস এম এ কবীর হাসান, নাগরিক যুব ঐক্যের সহসভাপতি রবিউল ইসলাম, সজিব সাহা সাজু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম মাহফুজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য মো: শামীম আহমেদ, যুব ঐক্য নেতা পাগলা জাইদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, যুগ্ম সম্পাদক ডাক্তার জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য মহিদুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ার, ০সাকিব আনোয়ার, রাজ্জাক সজিব, যুব ঐক্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকেয়া ইসলাম কেয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এলিজা নুসরাত, দপ্তর সম্পাদক সালমান ফারসী, কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য ইমরান খান, মোফাস্সেল তাহেরী রফী, যুব ঐক্য ও ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।