চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় মামুনুর রশিদ ওরফে সাগর নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার করা হয়। এ ঘটনায় তার দুই সহোদরসহ ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

বুধবার (২০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক এ রায় দেন।
একই ঘটনায় আরও একজনকে হত্যা চেষ্টার দায়ে আজম নামে এক আসামিকে যাবজ্জীবন ছাড়াও আরও ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়

এ ঘটনায় আসামিরা হলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শাহ মীরপুর গ্রামের মো. আজম (২৬),মো. ফারুক ওরফে আশিক, আলী আজগর ওরফে হৃদয় (২০), মো. ওমর উদ্দিন, মো. শওকত হোসেন ওরফে শাহনূর (২২), এসএম আশরাফুল আলম ওরফে সুমন (২৬) এবং শাহনূরের ভাই মো. পারভেজ (২৭)। এদের মধ্যে পারভেজ ও সুমন পলাতক রয়েছেন। বাকিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণার পর কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. আইয়ুব খান সংবাদমাদ্যমকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অপরাধ প্রমাণ করতে পারায় আদালত এ রায় দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় মাদকসেবীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শাহ মীরপুর এলাকার জমাদার বাড়ির সামনে আসামিরা মামুনুরকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা মো. আজিজকেও কুপিয়ে আহত করেন আসামি আজম। স্থানীয়রা দুজনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভুক্তভোগী মামুনুরকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মামুনুরের ভাই মো. ইয়াছিন পরদিন কর্ণফুলী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তাঁদের মধ্যে মো. ফারুক, আজগর ও ওমর উদ্দিন অন্য আসামিদের জড়িয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত এ রায় দেন।

রায় উপলক্ষে নিহতের মা হোসনে আরা বেগম আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তিনি ছেলের শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আসামিদের ফাঁসির আদেশ না হওয়ায় তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে নিহতের ভাই ও মামলার বাদী মো. ইয়াছিন বলেন, আমরা এ রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির (ফাঁসি) জন্য হাইকোর্টে যাব। আমার ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading