
প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি বিরোধী বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন , তার প্রতিক্রিয়া জানাতে যেয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছেন , বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন না, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। তার আমলে সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে যদি নির্বাচন হতো, তাহলে বিরোধী দল কাকে বলে বুঝতে পারতেন। তিনি বিরোধী দলের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না বলেই বিরোধী দলের সংজ্ঞাটা ওনার জানা নেই। তিনি নিজের মাধ্যমে তথাকথিত একটা বিরোধী দল সংসদে রেখেছেন। সেই কারণে তিনি বিরোধী দল দেখতে পাচ্ছেন না। একটাই কারণ, বিরোধী দলের রাজনৈতিক চর্চায় তিনি পদেপদে বাধা দেন। এটা স্বৈরতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদকে হার মানিয়েছে।
বিরোধী দল আছে কি নেই, তার প্রমাণ যদি করতে হয় তাহলে পদত্যাগ করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তখন তিনি বলতে পারবেন, বিরোধী দল আছে কি নেই। তিনি যদি বিএনপির কথা বলেন, তাহলে আমি বলব বিএনপি বিরোধী দল না। বিএনপি হল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। সরকার যেহেতু নির্বাচিত না, যেখানে সরকার নেই, সেখানে বিরোধী দল না থাকাই ভালো।
আমরা জানি ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একটি গণতান্ত্রিক সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেন। সেটা স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে সেই স্বৈরাচারী শব্দটাকে মুছে ফেলেছে। একটা নির্বাচিত সরকারে রূপান্তরিত করেছে। তার সহযোগী হলেন শেখ হাসিনা। বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্যু করে ক্ষমতায় আসেনি বা কারো ক্ষমতা কেড়েও নেয়নি। বিএনপি একটি সাধারণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দল গঠন করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে যখন দল ছিল, সেই মুহূর্তে ১৫ আগস্ট এবং ৭ নভেম্বর ঘটনার পরে জিয়াউর রহমানের যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা, তার পরবর্তী পর্যায়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে বিএনপি গড়ে উঠেছে। প্রতিটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করছে। তাই শেখ হাসিনা যে ভাষায় বলতে চান, এটা তার স্ববিরোধী কথা। ওনার মুখে এ ধরনের ‘বালখিল্য কথা’ শোভা পায় না।