পরিবার আওয়ামী লীগ, ছাত্রদল সভাপতি বাড়ি যান না ১৫ বছর

ছাত্রদলের শ্রাবণের বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলাম। এছাড়া তার ভাইয়েরা জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা।
আওয়ামী পরিবারের একজন সদস্যের ছাত্রদলের সভাপতি হওয়ার বিষয়টি কেশবপুর উপজেলা জুড়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। শ্রাবণ ছাড়া তার পরিবারের সকলে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের কোনো না কোনো পর্যায়ের নেতা।
রবিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। আংশিক গঠিত কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
কেশবপুরের স্থানীয়রা জানান, শ্রাবণের বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী রফিকুল ইসলাম নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। শ্রাবণের বড় ভাই কাজী মুস্তাফিজুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, মেজ ভাই কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, সেজ ভাই কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক।
বড় ভাই মুস্তাফিজুর রহমান সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রাবণ ছাত্রদল নেতা হওয়ায় সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার বাবা কাজী রফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। এ জন্য তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। আমরা পাঁচ ভাই ও এক বোন। সবার ছোট শ্রাবণ। মেধাবী ছাত্র। ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত।
মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, রাজনীতির কারণে ১৫ বছর ধরে পরিবারের সাথে শ্রাবণের কোনো সম্পর্ক নেই। সংসদ নির্বাচনে এলাকায় এসেছিল ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে। কিন্তু বাড়ি আসেনি।
অপরদিকে শ্রাবণ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রবিবার রাতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। কেশবপুরের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রনেতারা আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, কেশবপুরের কৃতী সন্তান কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় কেশবপুরের ছাত্রদলের সকল ইউনিট খুশি ।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম অটল বলেন, শ্রাবণ একজন পরিশ্রমী ও তুখোড় ছাত্রনেতা। এ খবরে সন্ধ্যায় বিএনপির দলীয় পার্টি অফিসে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
তবে রবিবার রাতে উপজেলা ছাত্রদল মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি আনন্দ মিছিল বের করলে উপজেলা ছাত্রলীগ বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।
কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খান মুকুল বলেন, ছাত্রদল নেতা–কর্মীরা আনন্দ মিছিলের নামে রাস্তায় নেমে উত্তেজনা সৃষ্টি করে সরকার বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল, ফলে তাদের প্রতিহত করতে বাধ্য হয়েছি।