
গত ১৮ এপ্রিল ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে’ পালনের জন্য একটি যোগ্য স্থান হিসেবে নিউটাউনের ট্রাম রেস্টুরেন্টকে নির্বাচন করে ছায়ানট (কলকাতা)। ঘটনাক্রমে বারটি ছিল সোমবার। নিউটাউনে সোমবার সবসময়ই রোববারের মতো ছুটির দিন, ভিড়ভাট্টাহীন।
কলকাতার ‘ছায়ানট’ নামে অগ্রণী নজরুল চর্চাকারী সংস্থা ডাক দিয়েছিল বছরের এই বিশেষ দিনটি উদযাপনের জন্য। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়েছিলেন জনা পঞ্চাশেক সংস্কৃতিমনা মানুষ। যদি স্বীকার করেন, সংখ্যার উপস্থিতি দিয়ে একটি অনুষ্ঠানের গুণাগুণ নিরূপণ সবসময় ঠিক নয়, আসল কথা হলো অনুষ্ঠানের মান। তাহলে সত্যিই এই অনুষ্ঠানটি ছিল উচ্চমানের। এই দিনের সন্ধ্যাটি কাজী নজরুল ইসলামের আবৃত্তি, গান, আলোচনা ও ক্যুইজে মুখর হয়ে উঠেছিল। কাজী নজরুল ইসলামের বিভিন্ন মেজাজের কবিতা আবৃত্তির মধ্যে এটা পরিস্ফুট হল যে তাঁরা আবৃত্তিকে জীবনের সংস্কৃতি সাধনার অঙ্গ হিসেবে আত্মস্থ করেছেন। গান গেয়েছেন যাঁরা তাঁরাও পরিনত মানের।
শিশু কিশোরদের আবৃত্তি পরিবেশন ছিল পরিচ্ছন্ন। ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে’ উপলক্ষে ক্যুইজের বিষয় ছিল সুনির্বাচিত – কলকাতার অতীত ও বর্তমান। ক্যুইজের পুরস্কারগুলির মধ্যে সুচিন্তিত রুচি এবং ভারতীয় ও বঙ্গীয় কৃষ্টির ছাপ ও উদ্ভাবনী শক্তির প্রকাশ ছিল। ক্যুইজ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন জনাব আবুবকর। সমগ্র অনুষ্ঠানকে মর্যাদাবান করে তুললেন দিল্লি শহরের বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি শ্রী তপন সেনগুপ্ত, HIDCO-র প্রধান কর্মকর্তা শ্রী দেবাশিস সেন এবং তালবাদ্যের স্বনামধন্য শিল্পী মল্লার ঘোষ এবং বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী শ্রীমতী মল্লিকা ঘোষ। সাম্প্রতিক কালের কাছেপিঠে ঘোরার ও দেখার নিউ ডেস্টিনেশশন নিউটাউনের ইকো পার্কের সামনে মাদার’স ওয়াক্স মিউজিয়াম। তারই সম্মুখভূমিতে অবস্থিত ট্রাম রেস্টুরেন্টে যে অনুষ্ঠান দেখা হলো সেটা মনে দাগ কাটার মতো। আর সমগ্র অনুষ্ঠানকে ভাষার কারুকার্যে মন্ডিত করে দিলেন ছায়ানট-এর কুশলী সভাপতি, সোমঋতা মল্লিক যাঁর অদম্য উৎসাহ আর আশ্চর্য উদ্ভাবনী শক্তি নব নব শাখায় বিস্তার লাভ করছে।
প্রতিবেদক : জি এম আবুবকর ।