নিজের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোটের পদক্ষেপকে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ বলে আবারও অভিহিত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার সরকারের ‘স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির’ কারণে এমনটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নিজের দলের ভিন্নমতাবলম্বী এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সতর্ক করে ইমরান খান বলেন, দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের বা তাদের ‘মনিবদের’ ক্ষমা করবে না।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

ইমরান খান সরকারের ভাগ্য নির্ধারণে জাতীয় পরিষদে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটের দিনকে সামনে রেখে এসব কথা বললেন তিনি।

হুমকির চিঠি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, ‘৮ মার্চ, বা সম্ভবত তার আগে ৭ মার্চ, আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি বার্তা পেয়েছি … না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, আমি যা বলতে চাচ্ছি, তা হলো অন্য কোনও দেশ থেকে এসেছে। বার্তাটি শুধু প্রধানমন্ত্রীর (নিজেকে উল্লেখ করে) বিরুদ্ধে নয় কিন্তু আমাদের জাতির বিরুদ্ধে।’

তিনি দাবি করেন, জাতীয় পরিষদে বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব আনার আগেই বার্তা পাঠানো দেশটি বিষয়টি জানতো।

‘সুতরাং এর মানে তারা (বিরোধীরা) এসব কিছু হওয়ার আগে বিদেশের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল’, বলেন ইমরান খান।

তিনি আরও বলেন, মজার বিষয় হলো ষড়যন্ত্র পাকিস্তানের নেতৃত্ব বা সরকারের বিরুদ্ধে নয়, শুধুমাত্র ইমরান খানের বিরুদ্ধে।

পাকিস্তানের সরকারপ্রধান বলেন, চিঠি পাঠানো দেশটির অবস্থান হলো তারা ‘পাকিস্তানের প্রতি ক্ষুব্ধ’ এবং ইমরান খান এই অনাস্থা ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে গেলে তারা ‘পাকিস্তানকে ক্ষমা করবে’।

তিনি বলেন, আমি আজ আমার জাতিকে জিজ্ঞেস করি- এটা কি আমাদের অবস্থা? আমরা ২২০ মিলিয়নের একটি জাতি। অন্য একটি দেশ, তারা (প্রধানমন্ত্রী ইমরান) রাশিয়ায় গিয়েছেন বলা ছাড়া (হুমকির জন্য) অন্য কোনও কারণ দিচ্ছে না।

বিরোধী নেতাদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিদেশি বাহিনী শেহবাজ শরীফ, ফজলুর রহমান ও আসিফ আলি জারদারিকে ‘পছন্দ করেছে’। কারণ তারা ‘কোথায় অর্থ ও সম্পদ আছে’, তা জানে। তাদের ১০ বছরে ৪০০টি ড্রোন হামলা হয়েছে এবং তারা একবারও এর নিন্দা করেনি।

ইমরান খান বলেন, সবচেয়ে জঘন্য বিষয় হলো যাদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র (অনাস্থা প্রস্তাব) করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি শক্তির সম্পর্ক রয়েছে। তারা হলো হাতের পুতুল, হাতের পুতুল মানে হলো অনুগত দাস।

প্রসঙ্গত, আগামী ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রীই তাদের পাঁচ বছরের ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই রাজনৈতিক কিংবা সামরিক অস্থিরতার মুখে সবাইকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।

সূত্র: ডন

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading