
প্রতিদিনই দেশে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে চলছে। এসব রোগীদের একটি বড় অংশই শিশু। রাজধানীর আইসিডিডিআরবিতে প্রতিদিনই সহস্রাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে। যেখানে আগে দিনে গড়ে ভর্তি হতো ৪০০-৫০০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে রাজধানী এবং এর আশেপাশের এলাকায়।
অধ্যাপক নাজমুল বলেন, ডায়রিয়া মোকাবিলা করার জন্য বিশুদ্ধ পানি পান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক অবস্থাতেই রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আইসিডিডিআরবি সূত্র জানায়, এ বছরের ২৮ মার্চ এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ রোগী (১৩৩৪ জন) আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি হয়েছেন। এসব রোগীদের অনেকের বয়স পাঁচ বছরের কম।
প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে, ডায়রিয়া হলে এক প্যাকেট স্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। ১০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতিবার পায়খানার পর ১ গ্লাস (২৫০ মিলিলিটার) স্যালাইন খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে, প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর ওজন যত কেজি তত চা-চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে আনুমানিক সেই পরিমাণ খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। সেইসঙ্গে শিশু বমি করলে ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে। যেমন—৩ বা ৪ মিনিট পর পর ১ চা-চামচ করে।
ডায়রিয়াতে আক্রান্ত শিশুদের খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি যাদের বয়স ২ বছরের নিচে, সেসব শিশুকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। কোনও অবস্থাতেই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। ডায়রিয়া রোগীকে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি সব ধরনের স্বাভাবিক খাবারও দিতে হবে বলেও জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।
খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি রোগীকে বেশি বেশি তরল খাবার যেমন—ডাবের পানি, চিড়ার পানি, স্যুপ খাওয়ানোর পরামর্শও দিয়েছে আইসিডিডিআরবি। তারা বলছে, কোমল পানীয়, ফলের জুস, আঙ্গুর, বেদানা না খাওয়ানোর জন্য। রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে দ্রুত হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
ফোটানো পানির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পানি ফোটানোর সময় বলক ওঠার পর আরও পাঁচ মিনিট চুলায় রাখতে হবে। এরপর সেই পানি ঠান্ডা করে পান করতে হবে। পানি ফোটানোর ব্যবস্থা না থাকলে প্রতি ৩ লিটার পানিতে একটি পানি-বিশুদ্ধকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি নিরাপদ করে তারপর পান করতে হবে। রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর ও উন্মুক্ত খাবার না খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শিশুদেরকে ফিডার না খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছে তারা।