
পটুয়াখালীতে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল সোমবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত ২ হাজার ৫৬০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জন ও তার আগের দিন ৬৪ জন আক্তান্ত হয়েছে।
এছাড়া গত সাতদিনে (এক সপ্তাহে) ৫০৪ জন, গত এক মাসে ১ হাজার ২৬৩ জন এবং চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত সোমবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত দুই মাস ২৮ দিনে (মোট ৮৭ দিন) ২ হাজার ৫৬০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত কারও মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সবচেয়ে বেশি চাপ রয়েছে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ মেডিকেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। গত সাত দিনে ১০৩ জন, গত এক মাসে ৩৭১ জন এবং জানুয়ারি থেকে গত সোমবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত দুই মাস ২৮ দিনে ৭৫২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি উপজেলায়ই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর প্রচন্ড চাপও রয়েছে। ডায়রিয়া রোগীর বেডের চেয়ে রোগীর সংখ্যা তিন থেকে চার গুণ বাড়তি রয়েছে। এর ফলে হাসপাতালের মেঝে, সিঁড়ির কোনায়, বারান্দায় অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনিতেই সারাদেশে চলছে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, তার ওপর ডায়রিয়ার প্রকোপে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করছেন ভূক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা।
জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের তথ্যমতে, বিভিন্ন উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী রয়েছে। কলাপাড়ায় ৪৮৫ জন, বাউফলে ২৪৭ জন, মির্জাগঞ্জে ১৯৬ জন, দুমকিতে ৫৫ জন, গলাচিপা ৩০৬ জন, দশমিনায় ২১৬ জন ও সদর উপজেলায় ২৮৮ জন।
এদিকে এ বছর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন মজুদ রয়েছে। জেলায় ১ হাজার সিসি স্যালাইন ১৪ হাজার ১০০ এবং ৫০০ সিসি স্যালাইন ৬ হাজার ৩৮০টি ব্যাগ মজুদ রয়েছে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান জানিয়েছেন, জেলার সর্বাত্মক ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। গত তিন থেকে চার দিন ধরে রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এমনটাই হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ডায়রিয়ার পরিস্থিতি দেখার জন্য ইতোমধ্যে মির্জাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করা হয়েছে।