যাত্রা শুরু করেছে ‘ফ্লাই ডাইনিং’ নামে একটি ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট। কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গেলেই দেখা মিলবে এই রেস্টুরেন্টের। ঝুলন্ত অবস্থায় টেবিলে বসে রেস্টুরেন্টে নানা স্বাদের খাবার গ্রহণ করতে পারবেন যে কেউ।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৈকত পাড়ের সুগন্ধা পয়েন্টে এই রেস্টুরেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান ও ফ্লাই ডাইনিং রেস্টুরেন্টের কর্ণধার নবাব ফয়েজ আবু বক্কর খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অত্যাধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ক্রেনের সাহায্যে সৈকতের ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬০ ফুট উঁচুতে এই রেস্টুরেন্টে খাবার সরবরাহ করা হবে। দেশের প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতির এই ‘ফ্লাই ডাইনিং’ নির্মাণ করেছে আন্তর্জাতিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ‘ইউর ট্রাভেলস লিমিটেড’।

স্ংশ্লিষ্টরা মনে করছেন আধুনিক জগতের এমন ব্যতিক্রম আয়োজন বদলে দেবে কক্সবাজারের পর্যটনের আবহ। এখানে খাবার গ্রহণের সময় বাড়তি আনন্দ উপভোগ করবেন গ্রাহকরা।এতে মেঘের রাজ্যে বসে আপ্যায়িত হওয়ার এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি পাবেন পর্যটকরা।

রেজমিন দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল সি প্রিন্সেসের পাশে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে রেস্টুরেন্টটি। বসার পর্যাপ্ত স্থান রেখে চালু করা হয়েছে ‘ফ্লাই ডাইনিং’ রেস্তোরাঁ ও রান্নাঘর।

রেস্তোরাঁর পশ্চিম পাশে খালি স্থানে বসানো হয়েছে একটি ক্রেন। একটি বিশেষ পাটাতনে ২০ জন ধারণক্ষমতার চেয়ার, টেবিল ও ওপরে ছাতার মতো এক ধরনের ছাদ তৈরি করে চারপাশ খোলা রাখা হয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের সমন্বয়ে তৈরি বিশেষ তার ক্রেনের মাথায় লাগিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে পাটাতন। রান্নাঘরে পছন্দমতো খাবার অর্ডার করলে ‘ঝুলন্ত পাটাতনে’ সেই খাবার পরিবেশন করবেন রেস্টুরেন্টের কর্মীরা।

আয়োজকরা জানান, ২০ জনের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ‘ফ্লাই ডাইনিং’ রেস্টুরেন্টটি মাটি থেকে সৈকতের ১৬০ ফুট ওপরে তুলে চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে ক্রেতাদের খাবার পরিবেশন করবে। এ সময় আকাশ থেকে উপভোগ করা যাবে সৈকত ও আশপাশের দৃশ্য। এতে খাবারসহ জনপ্রতি খরচ পড়বে চার হাজার থেকে সাড়ে আট হাজার টাকা। পাটাতনে ওঠা, আকাশে উড্ডয়ন এবং অবস্থান ও নেমে আসার সময়সহ প্যাকেজের সময়সীমা থাকবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। রান্নাবান্না ও যাবতীয় ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী টনি খান।

উদ্বোধনী দিনে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার গ্রহণ করা জসিম উদ্দিন, তুষার তুহিন, আবদুল আজিজসহ একাধিক পর্যটক জানান, এটি অন্যরকম অনুভূতি। পাটাতনের চেয়ারে বিমানের মতোই লাগানো সিট বেল্টে প্রথমে নিজেকে বাঁধা হয়। প্রথমে একটু ভীতি কাজ করলেও ওপরে উঠার পর মনের আনন্দে সব ভুলে যান। ওপর থেকে সাগরের ঢেউ এবং কক্সবাজারের পাহাড়, আশপাশ এবং ভবনগুলো বিমোহিত দৃশ্যে ধরা দেয়। এটি পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নতুন সংযোজন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading